ক্রাইমবার্তা রিপোট:গাজীপুর সংবাদদাতা, বাড়ি ফেরার পথে মালয়েশিয়া প্রবাসী এক ব্যক্তিকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় তার মালামাল লুট করে পালিয়ে যায় তারা। মঙ্গলবার তার গাজীপুরের হায়দ লাশ রেল লাইনের পাশ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদিকে শ্রীপুরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে এক স্কুল ছাত্রকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এঘটনায় পুলিশ নিহতের এক বন্ধুকে আটক করেছে।
টঙ্গী রেলওয়ে ফাঁড়ির এএসআই দেলোয়ার হোসেন ও গাজীপুর সিটির ৩৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল হাসান বিল্লাল জানান, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মাজুআইল গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে সফিকুল ইসলাম (৩৫) ২০০৭ সালে চাকুরির উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া যান। সেখানে গিয়ে তিনি মালয়েশিয়ান এক নারীকে বিয়ে করেন। সফিকুল তার স্ত্রীর কাগজপত্র ঠিকঠাক করতে সোমবার রাতে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরেন। পরে তিনি ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হন। মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের হায়দরাবাদ এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী রেলপথের পাশে তার লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। এসময় লাশের অদূর থেকে একটি ব্যাগও উদ্ধার করে। পুলিশ ব্যাগ থেকে সফিকুল ইসলাম এবং তার মালয়েশিয়ান স্ত্রী সিতি হাজার বিনতির দুইটি (SITI HAJAR BINTI) পাসপোর্ট উদ্ধার করে। পাসপোর্টে থাকা মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে তার পরিচয় নিশ্চিত হয়। খবর পেয়ে তার মা রাজু বালা বেগম ঘটনাস্থলে এসে লাশ সনাক্ত করেন। পুলিশের ধারণা, সফিকুলের কাছ থেকে মালপত্র ছিনিয়ে নিয়ে ছিনতাইকারীরা তাকে ট্রেন থেকে ফেলে দিলে তিনি মাথায় আঘাত পেয়ে মারা যান।
এদিকে, গাজীপুরের শ্রীপুরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এক স্কুল ছাত্রকে হত্যা করে তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের এক বন্ধুকে আটক করেছে। নিহতের নাম হিমেল (১৩)। সে ময়মনসিংহের গফরগাঁও থানার মুথার চর গ্রামের দুবাই প্রবাসী কাজল মিয়ার ছেলে এবং শ্রীপুর উপজেলার ত্রিমোহনী এলাকার বিডি ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র।
শ্রীপুর মডেল থানার এসআই বিনয় কুমার জানান, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নান্দিয়াসাংগুন এলাকায় নানা আবু তালেবের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করত হিমেল। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে কে বা কাহারা তাকে মোবাইল ফোন করে নানার বাড়ি থেকে বাইরে ডেকে নেয়। রাতে হিমেল আর বাড়ি ফিরেনি এবং তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। হিমেলের খালা ফাতেমা জানান, রাতভর সম্ভাব্য সকল স্থানে খুঁজেও হিমেলের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরদিন মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে নানার বাড়ির অদূরে ধান ক্ষেতের কাঁদার মধ্যে হিমেলের লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে হিমেলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ নিহতের বন্ধু মাসুদকে (১৫) আটক করেছে। আটক মাসুদ স্থানীয় নান্দিয়াসাংগুন এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের খালা ফাতেমা বেগম প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, বিদেশ থেকে বাবার পাঠানো হিমেলের মূল্যবান মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়ার জন্যই ঘাতকরা হিমেলকে কাঁদায় মুখ চেঁপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। ঘাতকরা মোবাইল ফোনটি লুটে নিয়ে তা বন্ধ করে দিয়েছে।