ক্রাইমবার্তা রিপোট:পুলিশের লাঠিপেটায় আহত এক নারী শ্রমিককে আজ মঙ্গলবার হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন অন্যরা।
চট্টগ্রামে বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত তৈরি পোশাক শ্রমিকদের ওপর পুলিশ লাঠিপেটা করেছে বলে জানা গেছে। এতে অন্তত ১৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা শ্রমিকও আছেন বলে জানা গেছে।
আজ মঙ্গলবার নগরীর সাগরিকা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সকাল থেকে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের পর পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জিনস এক্সপ্রেস লিমিটেড নামে কারখানাটিতে শ্রমিকদের কয়েক মাসের বকেয়া বেতনের একটি অংশ ৭ জানুয়ারির মধ্যে পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের এক সপ্তাহ পরও বেতন না দিয়েই পণ্য রপ্তানি শুরু করে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। বেতনের দাবিতে আজ সকাল থেকেই কারখানায় আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা।
শ্রমিকরা জানান, পুলিশ ব্যাপক লাঠিপেটায় তাঁরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। তাঁদের অন্তত ১৫ সহকর্মী আহত হন।
তবে লাঠিপেটার কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড়তলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, লাঠিপেটার কোনো ঘটনা ঘটেনি। আন্দোলনরত শ্রমিকদের কেবল আশ্বস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। শ্রমিকরা সকাল ৮টা থেকে কাজ না করে কারখানায় অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল বলে দাবি করেন তিনি।
কারখানার শ্রমিক শিউলি বেগম জানান, পুলিশের লাঠিপেটায় তাদের অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছেন। লাঠিপেটায় পারভিন নামে তাঁদের এক অন্তঃসত্ত্বা সহকর্মী মারাত্মক আহত হয়েছেন। তাঁকেসহ অন্যদের দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে ভর্তি করা হয়।
হাসিনা বেগম নামে আরেক শ্রমিক বলেন, মাস শেষ হওয়ার পর দিনের পর দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও বেতন না পাওয়ায় তাঁরা ভীষণ বিপদে পড়েছেন। বাড়িভাড়া বা সংসারের খরচ চালানোই অসম্ভব হয়ে পড়েছে তাঁদের জন্য। এই অবস্থায় কোনো উপায় না পেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা। কিন্তু সেই আন্দোলনেও পুলিশ লাঠিপেটা করেছে।
পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহকারী ব্যবস্থাপক মো. আজিজ উদ্দিন জানান, জেনস এক্সপ্রেস লিমিটেডের মালিকের নাম মোরশেদ হোসেন। তিনি তিন মাসের বেশি সময় ধরে দেশের বাইরে আছেন। এ সময় এক্সিম ব্যাংক শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করবে। তিনি জানান, কারখানাটি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। এক্সিম ব্যাংক বকেয়া বেতন পরিশোধ করার পর তা আবার খুলে দেওয়া হবে।