সুনামগঞ্জের জলমহাল নিয়ে আ. লীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, নিহত ৩

ক্রাইমবার্তা রিপোট: সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে জলমহাল দখলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের ঘোরামারা সাতপাকিয়া প্রকাশিত জারলিয়া জলমহালে এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষ বন্দুকসহ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী এবং এলাকাবাসী সূত্র জানায়, জলমহালটির দখল নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ও দিরাই-শাল্লার সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের লোকদের মধ্যে এ সংঘষ হয়। সংঘর্ষে মতিউর গ্রুপের তাজুল ইসলাম (৩৫)

নামের একজন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। সিলেট ওসমানী মেডিকেলে নেয়ার পথে শাহারুল ও উজ্জল মিয়া নামে দু’জন পথে মারা যায়। খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে। উভয় পক্ষের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
দিরাই থানা পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দিরাই উপজেলার কূলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামসংলগ্ন জারলিয়া (ঘোড়ামারা সাতপাকিয়া) নামক জলমহালের দখল নিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অনুসারী যুবলীগ নেতা একরার হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা মাসুক মিয়ার গ্রুপের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এই জলমহালটি নিয়ে প্রতিবছরই সংঘর্ষ ও বন্দুকযুদ্ধ হয়ে থাকে।
বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সমর্থন না পেয়ে একরার হোসেন মতিউর রহমানের গ্রুপে যোগ দিয়ে তার সমর্থনে কুলঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। এর পর থেকেই সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও মতিউর রহমান গ্রুপের দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সমর্থনের প্রার্থীদের ভরাডুবি হলে মতিউর গ্রুপ আরো শক্তিশালী হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন জলমহালে উভয় পক্ষের দখল নিয়ে সংঘর্ষের দানা বাধে। মঙ্গলবার জারলিয়া জলমহালে হাতিয়া গ্রামের সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান আহাদ মিয়া ও মতিউর রহমান অনুসারী যুবলীগ নেতা একরার হোসেনের নেতৃত্বে দুই পক্ষ দখল নিতে গেলে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই একরার হোসেনের পক্ষে হাতিয়া (আকিলনগর) গ্রামের সোনা উল্লাহর ছেলে তাজুল ইসলাম (৩৫) নিহত হন। গুলিবিদ্ধ ইসহাক মিয়ার ছেলে শাহারুল (২৫) ও আমান উল্লার ছেলে উজ্জল মিয়াকে (২৮) সিলেট ওসমানী মেডিকেলে নেয়ার পথে মারা যায়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়। বন্দুকযুদ্ধের বিষয়ে এক পক্ষ অপর পক্ষকে দায়ী করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল জলিল বন্ধুক যুদ্ধের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন জলমহাল দখল করতে গেলে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে ৩ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

Check Also

সাতক্ষীরা টু শ্যামনগর মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন

দেবহাটা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা টু শ্যামনগর মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। মঙ্গলবার (১৯ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।