ক্রাইমবার্তা রিপোট:নাটোরের নলডাঙ্গায় দুই ওয়ার্ড আওয়ামী সভাপতির পূর্ব অনুমতি না নেয়ার কারণে কবর খোঁড়াসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরও দাফন করা সম্ভব হয়নি বৃদ্ধা আঞ্জুমান আরার (৭৫) লাশ।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন এলাকায় গেলে এলাকাবাসী জানায়, বাঁশিলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মরহুম সুলতান মন্ডলের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা (৭৫) বুধবার বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন। তার সন্তানদের কাছে আগে থেকে করা ওসিয়ত মতো তার লাশ নিজ গ্রাম বাঁশিলা কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তার স্বামীর পাশে দাফন করার প্রস্তুতি নেয়া হয়।
তার মৃত্যুর পর সেই অনুযায়ী কেন্দ্রীয় গোরস্থানের সভাপতি মোঃ আজিজ খাঁ ও সহ-সভাপতি জয়নাল খাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে রেজুলেশন মোতাবেক পরিবারের পক্ষ থেকে ৫ শ’ টাকার জায়গায় এক হাজার টাকা গোরস্থান তহবিলে জমা দিয়ে অনুমতি নেয়া হয়। পরে কেন্দ্রীয় গোরস্থানের কমিটির সদস্য হাসান ও ইসমাইল গোরস্থানে গিয়ে কবরের জায়গা নির্ধারণ করে দিয়ে আসে। পরিবারের পক্ষ থেকে কবর খোঁড়া হয়। লাশ কবরে নামানোর জন্য রাতে জেনারেটরের ব্যবস্থা করে পরিবারের সদস্যরা।
পরে তার লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় ফৌজদার পাড়া মোড়ে যেতেই মাধনগর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহের উদ্দিন সকলকে থামিয়ে দেয় এবং জানান, তাদেরকে আগে থেকে না জানানোর কারণে লাশ কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করতে দেয়া হবে না। মরহুমের পরিবার ও এলাকাবাসীর অনেক অনুনয় বিনয় দেখানোর পরও অনুমতি না পাওয়ায় নতুন করে বাঁশিলার বিল জোয়ানিয়া গ্রামে কবর তৈরি করে বৃদ্ধা আঞ্জুমান আরার লাশ দাফন করা হয়।
আঞ্জুমান আরার ছেলে রেজাউল করিম বলেছেন, আমি এবং আমার ভাইয়েরা আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহের উদ্দিনসহ বাধাদানকারীদের হাতে পর্যন্ত ধরেছি, তবুও তাদের মন গলেনি। তারা আমাদের মায়ের লাশ বহনের খাটিয়ায় ধাক্কা মেরে আমাদের তাড়িয়ে দেয়। পরে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠলে আওয়ামী লীগ সভাপতি আমাদের সাথে কথা বলতে এলেও আমরা কথা বলিনি। আমরাও আওয়ামী লীগ করি, সেটা সদরের এমপিসহ সকলেই জানেন। তারপরও আমাদের মায়ের লাশ দাফন নিয়ে এমন আচরণ বড়ই বেদনার।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তাহের উদ্দিন বলেন, গোরস্থান এলাকার অধিবাসী না হওয়ায় এই মহিলার লাশ কেন কবর দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে- কমিটির সেক্রেটারির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়। এমন সময় লাশ দাফন করতে নিয়ে এসে জটিলতা দেখে তারা লাশ নিয়ে ফিরে যায়। এর আগেও একই কারণে অন্য একজনের লাশ দাফন করতে দেননি বলেও তিনি স্বীকার করেন।