ক্রাইমবার্তা রিপোট:ইবি সংবাদদাতা-ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আল-ফিক্হ বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের মাহমুদুল হাসান লিটন নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে টিউশনির প্রলোভন দেখিয়ে মারধর ও ছিনতাই করেছে বলে জানা গেছে। শনিবার সন্ধায় কুষ্টিয়া স্টেডিয়াম মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সোমবার বেলা ১২টায় মেইন গেট অবরোধ করে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে ছাত্রলীগ। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর তাদের দাবি পুরনের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয়।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় আল-ফিক্হ বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষা বর্ষের মাহমুদুল হাসান লিটন নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে টিউশনির প্রলোভন দেখিয়ে গত কয়েকদিন ধরে ফোন করছিল। টিউশনি করাতে রাজি না হলেও তাকে জোর করে। গত শনিবার সন্ধায় তাকে কুষ্টিয়া মজমপুরে ডেকে নেয়। রকি নামে এক ব্যক্তি তাকে মজমপুর থেকে কুষ্টিয়া স্টেডিয়াম মাঠে নিয়ে আসে। স্টেডিয়ামে নিয়ে সেখানে ওৎপেতে থাকা ৫জন সন্ত্রাসী তাকে নারী ঘটিত ঘটনায় জড়িত বলে মারধর শুরু করে। পরে তার পরিবার থেকে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরিবার মুক্তিপণ দিলে তাকে মারধর করে ছেড়ে দেয়।
সোমবার ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত প্রদান করে। লিখিত আবেদনে জাড়িতদের শাস্তির দাবি জানায়।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় মেইন গেট অবরোধ করে ছাত্রলীগ । ছাত্রলীগ সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা মেইন গেট অবরোধ করে বেলা ১২টার গাড়ি আটকে দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের দাবি পুরনের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয়। আধা ঘন্টা পর বিশ্ববিদ্যালয় বাস ক্যাম্পাস ছেড়ে যায়। এসময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়ে। অনেকে লাইন বাসে গন্তব্যে পৌছে বলে জানা গেছে।
ইবিতে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা শুরু
ইবি সংবাদদাতা-
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের উদ্যোগে ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে দুই দিন ব্যাপী আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন কমিটির আহবায়ক ও মডারেটর প্রফেসর ড. মোঃ মামুনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ শাহিনুর রহমান ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সেলিম তোহা। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ডিবেটিং সোসাইটির সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম।
ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমের এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু মেরি টাইম বিশ্ববিদ্যালয়, শাহ্জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিশ্ববিদ্যালয়, কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিযোগীরা অংশ গ্রহণ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ৮টি ভ্যেনুতে এ প্রতিযোগিতা চলে। আজ মঙ্গলবার চুড়ান্ত প্রতিযোগিতা ও সমাপনী অনুষ্ঠিত হবে।
ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেছেন, ‘বিতর্ক বাঙালির ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবনের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠার এই অভিযাত্রার পুরোটাতেই কাজ করেছে আমাদের শাণিত যুক্তি এবং বুদ্ধি। সুতরাং বাংলাদেশের মানুষের একদিকে যেমন আছে দেশমাতৃকার জন্য প্রবল অপ্রতিরোধ্য আবেগ, আরেকদিকে তেমনি আছে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য, বিশ্বের অন্যান্য দেশের চাইতে এগিয়ে যাবার জন্য ক্ষুরধার শাণিত যুক্তি, বুদ্ধি এবং তর্কপ্র্রবণতা। তিনি বলেন, যুব সমাজকে বিজ্ঞানমনষ্ক, প্রগতিশীল, আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে তর্কপ্রিয়, বিতর্কপ্রিয়, যুক্তিনিষ্ঠ, বস্তুনিষ্ঠ করে গড়ে তুলতে হবে। বিতর্কের একমাত্র প্রথম এবং প্রধান উদ্দেশ্য হলো এক-একজন মানুষকে এক-একজন নেতায় পরিণত করা, নেতৃত্ব সৃষ্টি করা। তিনি মধ্যযুগের বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউরোপের অক্সফোর্ড, হারবার্ড-এর মতো এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যতালিকায়ও বিতকের্র উপর সিলেবাস ও কোর্স চলু করার বিষয়ে ইউজিসিসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বিতর্কের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ২১ শতকের পৃথিবী চায় সকল রকমের ভেদ-বুদ্ধি বর্জিত একটি একতাবদ্ধ জনগোষ্ঠি। তিনি এ প্রতিযোগিতা আয়োজনের সুযোগ করে দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। সেই সাথে তিনি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সকল বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ শাহিনুর রহমান বলেন, ‘বির্তকের মূল অর্থ হলো যে, কোনটি সত্য, কোনটি যৌক্তিক, কোনটি গ্রহণ করা যাবে – সেটিকে বের করে নিয়ে আসা। বিতর্ক মানুষকে যৌক্তিক করে, বিতর্ক মানুষকে শাণিত করে, বিজ্ঞানমনষ্ক করে, অসাম্প্রদায়িক করে। তিনি বলেন, বিতর্ক একজন মানুষকে যোগ্য করে তোলে কারণ একজন বিতার্কিক কখনো নেতিবাচক জিনিসকে গ্রহণ করে না। বিতর্ক আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক জীবনে অত্যন্ত জরুরী।’