ক্রাইমবার্তা রিপোট:মো:নজরুল ইসলাম,ঝালকাঠি:: সেবা, অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকতিস্বরুপ পুলিশ বিভাগে প্রশংসনীয় কাজের জন্য রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক(পিপিএম-সেবা) পেলেন ঝালকাঠি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম.এম. মাহমুদ হাসান। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) রাজারবাগ পুলিশ লাইনস্ মাঠে ‘জাতীয় পুলিশ সপ্তাহ- ২০১৭’এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে এ পদক পরিয়ে দেন। পদক প্রাপ্তির পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন,সাধারণ মানুষের প্রতি সেবার মান প্রসারিত করে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করাই আমার লক্ষ্য। আমৃত্যু দেশ ও মানুষের কল্যাণে আন্তরিকতার সাথে নিরলসভাবে, নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যেতে চাই। তিনি আরো বলেন, ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক প্রাপ্তিতে নতুন করে কাজের প্রতি উদ্দীপনা, উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা পেয়েছি। এর ফলে আমার সহকর্মীরাও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা পাবেন। কর্মক্ষেত্রে সকলের সার্বিক সহযোগিতা না পেলে এই পুরস্কার পাওয়ার পথ তৈরি হতো না। এজন্য তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সকল সহকর্মীদের নিকট গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অনসন্দনে জনাগেছে এম.এম. মাহমুদ হাসান ২৮-তম বিসিএস এর মাধ্যমে পুলিশ বিভাগে যোগদান করেন এবং ঐ বিসিএস এ তিনি মেধা তালিকায় পুলিশ ক্যাডারে ২য় স্থান অধিকার করেন। পুলিশ ক্যাডারে যোগদানের পূর্বে তিনি ২৭-তম বিসিএস(কৃষি) ক্যাডারে ২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বরিশালের মুলাদী উপজেলায় ‘কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পুলিশ বিভাগে যোগদান করে তিনি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে সহকারী কমিশনার হিসেবে কোতয়ালী মডেল থানা, এয়ারপোর্ট থানা, ডিবি, ট্রাফিক ও ফোর্সের দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে পালন করেন। এ সময় সৎ, সাহসী ও জন-বান্ধব পুলিশ অফিসার হিসেবে যথেষ্ট সুনাম কুড়ান মাহমুদ হাসান। ‘অপরাধীদের আতংক’ হিসেবেই বরিশাল বিভাগে তার পরিচিতি। ২০১৫ সালে তিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের(আরএমপি) সহকারী কশিনার হিসেবে বোয়ালিয়া মডেল থানা ও ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ২০১৫ সালের শেষের দিকে মাহমুদ হাসান ঝালকাঠি জেলায় এএসপি(সার্কেল) হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পরেই মাদক, জুয়া, জংগী ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন এবং দুধর্ষ ডাকাতদের গ্রেফতার করে তিনি ঝালকাঠি জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ঝালকাঠির দরিদ্র,অসহায়-নিপিড়িত ও নির্যাতিত মানুষদের আইনগত সহায়তা দিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা ও ভক্তির নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হন মাহমুদ হাসান। সকল পেশা ও শ্রেণীর মানুষের কাছে তিনি একজন জনবান্ধব পুলিশ অফিসার হিসেবে সমাদৃত। কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে অসামান্য অবদানের জন্য সোমবার তিনি রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক(পিপিএম-সেবা) পেলেন। জানা গেছে,মাহমুদ হাসান পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার স্বনামধন্য শিক্ষক মোঃ আবদুল কাদের মোল্লার সন্তান। তিনি পরিবারের সর্ব কনিষ্ঠ সন্তান। তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও বিভিন্ন দপ্তরে উচ্চপদে কর্মরত আছেন। শিক্ষা জীবনের প্রতিটি পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ন হয়েছেন। কর্মজীবনে তিনি সততা,নিষ্ঠা,আন্তরিকতা আর সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে অল্প সময়ের মধ্যেই পুলিশ বিভাগে ব্যাপক সাড়া ফেলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি ২০১২ সালে বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৫২-তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহন করে মেরিট মেডেল অর্জন করেন। পদক প্রাপ্তিতে তিনি আরও বলেন এ পদকের অংশীদার ঝালকাঠির আপামর জনসাধারণ যাদের দোয়া ও ভালবাসায় আমি এ পদক পেয়েছি। আমি জীবনের শেষ মুহূর্তু পর্যন্ত যেন অসহায়, নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করতে পারি এটাই আমার জীবনের একমাত্র ব্রত”। ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে তিনি সকলের আন্তরিক ভালবাসা, দোয়া ও সহযোগিতা একান্ত ভাবে কামনা করেন।#
Check Also
কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন
কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …