ক্রাইমবার্তা রিপোট: জনগণের ভোট অধিকার, গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীন প্রাচারণা ইত্যাদিসহ সকল সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন হলে যেকোন শক্তির সহযোগিতা নেবে বিএনপি বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ।
ডিবিসি টেলিভিশনের ‘রাজকাহন’ নামক টকশোতে তিনি কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ যদি মনে করে যে, জামায়াত এই স্বাধীন রাষ্ট্রের জনগণের আদর্শের সাথে যায় না। তবে তারা কেন তাদের নিষিদ্ধ করে দেয় না? এটাতো তাদের দায়িত্ব। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটা না করে এটাকে মুলধন করে রাজনীতি করছেন এবং ফলে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।
এসময় সার্চ কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমরা সবাই সবাইকে চিনি এবং সবার আচরণ থেকে শুরু করে সবার অতীত সম্পর্কে আমরা সাবাই জানি। সুতরাং এমন যদি কেহ থাকে তাহলে সেটা আওয়ামী-লীগ, বিএনপিও এবং জনগণও বুঝবে। এটা বোঝা আমাদের কারই খুব একটা কষ্টের হবে না। সুতরাং এই বিষয় নিয়ে আমাদের দ্বিধায় পড়ার কিছুই নাই।
তিনি আরও বলেন, যদি এটা স্বচ্ছ হয় সেটা বিএনপির পক্ষ থেকে মেনে নিবে। কারণ বিএনপি একটা স্বচ্ছ বাছাই কমিটি চাচ্ছে এবং যে জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে আমার এটা মেনে নিব। তিনি বলেন, বিএনপি একটা গণতান্ত্রিক দল। আমার চাই একটা হলে পরবর্তিতে নির্বাচন স্বচ্ছ নিরপক্ষে হবে এবং যেটা আমাদের মত জনগণও মেনে নিবে।
কিন্তু বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ৫জন করে ১০ জন যে মানুষের তালিকা দিবে তাতে কি আপনার কথা মত নিরপেক্ষ লোক আছে? উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ আছে, তা তো আমরা বিগত নির্বাচনের দিকে তাকালেই দেখা যায়। তাছাড়া আমরা কিন্তু এ রকম করে ৪টি নির্বাচন করেছি। সুতরাং এটা হচ্ছে সদিচ্ছা ব্যাপার।
তিনি বলেন, এখানে তালিকা কোন ইস্যু না। এখানে ইস্যু হচ্ছে ঐক্যমত। আমি বার বার একটা কথা বলছি যে, বিএনপি আওয়ামীলীগসহ সবাই আলাদা আলাদা তালিকা দিবে। কিন্তু দিনের শেষে কতগুলো লোক আছে যা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য। বাংলাদেশে এখনো এমন কোন অবস্থা সৃষ্টি হয়নি যেখানে ২০টা বা ১০টা মানুষ সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। এটা বিগত দিনেও গ্রহণযোগ্য হয়েছে এবং সামনেও হবে। সুতরাং এটা যে হবে না সেটা আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। চাইলে রাষ্ট্রপতি পারে।
এসময় তিনি আরও বলেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের কথা হচ্ছে তাদের যে বিশ্বাস সেটা সারা দেশের মানুষকে বিশ্বাস করতে হবে। সেটাতো সম্ভব নয়। এখানে আওয়ামী লীগের বিশ্বাস কিংবা আওয়ামী লীগের ইতিহাস নিয়ে আলোচানা হচ্ছে না। এখানে আলোচনা হচ্ছে দেশের গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, মানুষেল ভোটাধিকার, নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে। এমনকি একটা নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক নির্বাচিত সরকার নিয়ে। সুতরাং আমরা যদি আওয়ামী লীগের বিশ্বাস অবিশ্বাসে চলে যাই সেটাতো হতে পারে না।
কিন্তু আওয়ামী লীগ অনেক দিন ধরেই তো বলে আসছে যে, জামায়াতকে ছেড়ে আসলেই আপনাদের সাথে আলোচনায় বসবে? জবাবে তিনি বলেন, কিন্তু আমরা যদি অতীতের দিকে তাকাই তাহলে দেখা যায় যে, আ.লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারে সময় জামায়াতকে নিয়েই আন্দোলন করেছে। সেখানে বিএনপি যদি আজকের জামায়াতের সহযোগিতা নিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যে সংগ্রাম, জনগণের ভোটাধিকারের সংগ্রাম, নিরপেক্ষ নির্বাচনের যে সংগ্রামে যদি যাই তাহলে তাদের অসবিধা কোথায়? যে খানে আওয়ামীলীগ নিয়েছিলেন? সেখানে আমাদের বাধা কেন?
তিনি আরও বলেন, এখানে সমস্যাটা হলো, ঘরে আগুন লেগেছে এখন আগুন নিভাতে হবে। এখন যারা আগুন নেভাতে আসবেন সবাইকেই স্বাগত জানতে হবে। আগুন নেবানোর পরে জামায়াত কোন পথে যাবে বিএনপি কোন পথে যাবে যেটার সিদ্ধান্ত আমরা নিব। সুতরাং এই মুহুর্তে কে কোন দলে আছে সেটা কোন বিষয় না।
এখন বিএনপি আর জামায়াত নিয়ে আওয়ামীলীগ যে কথাগুলো বলে তার সাথে, গণতন্ত্র, জনগণের ভোটাধিকার, নিরপেক্ষ নির্বাচনের সাথে কোন সম্পর্ক নেই বলে আমি মনে করি। কিন্তু এই সকল আলোচনায় আ.লীড় যদি জামায়াতের এই ইস্যু টেনে নিয়ে আসে তাহলে আমার মনে হয়ে আমাদের মূল আলোচনা থেকে ছুঁড়ে ফেলা হয়।
তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোট অধিকার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীন সংবাদ প্রাচারণা ইত্যাদি যত সমস্যা আছে সেই সকল সমস্যা সমাধানে যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা যেকোন শক্তির সহযোগিতা নেব। কিন্তু আমাদের নির্বাচনি কৌশল কি হবে সেটা আমরা নির্বাচনেরর সময় আমরা আমাদের অবস্থান বলবো। কিন্তু এই মুহুর্তে জামায়াতে মূলধন করে আওয়ামীলীগ যে প্রচারণা করছে তার সাথে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার সাথে কোন সম্পর্ক নেই বলে আমি মনে করি।