ক্রাইমবার্তা রিপোট:জনগণই তার মূল শক্তি আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ আমাদের সাথে আছে, জনগণের শক্তিই আমাদের মূল শক্তি। সুতরাং আপনাদের ওপর জনগণের আস্থাকে বাড়াতে হবে এবং যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশেষ করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরো অধিক জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণ চাইলেই দেখাতে পারে কে কি কাজ করে এবং তাদের কাছ থেকেই সঠিক তথ্যটা পাওয়া যায়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার সকালে তার তেজগাওস্থ কার্যালয়ে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭’ উপলক্ষে উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।
বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে বহিঃবিশ্বে এবং দেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে প্রধনমন্ত্রী এই ষড়যন্ত্র ্েমাকাবেলায় পুলিশ বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্র্দেশ দেন।
রাষ্ট্র পরিচালনায় সহযোগী সংস্থাগুলোর সার্বিক উন্নয়নে তার সরকার কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় তার জঙ্গিবাদ বিরোধী জিরো টলারেন্স নীতির পুনরোল্লেখ করে বলেন, জঙ্গিবাদ যেন আবার মাথাচারা দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য পুলিশের জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযান চালিয়ে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের মাঝে একটা সচেতনতা সৃষ্টি করতে পেরেছি। জনগণকে এসব কাজের সাথে আরো সম্পৃক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, জঙ্গিরা মিথ্যা কথা বলে, ধর্মের অপব্যাখা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। কোমলমতি শিশুদের এখান থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আইন শৃঙ্খলা যেন সুন্দর থাকে সেটা দেখতে হবে।
বিএনপি-জমায়াতের শাসনামলে দেশে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা নিজেরাই একটু স্মরণ করে দেখেন, এই জঙ্গি-সন্ত্রাসি, এদেরকে তো তারা (বিএনপি-জামায়াত) মদদ দিত, উস্কে দিত।
২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালেও বিএনপি-জামায়াত যে সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে- যার ভেতরে এতটুকু মনুষত্ব আছে সে কিভাবে একজন মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে, এই পুলিশকে কিভাবে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে হত্যা করা হলো বা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হলো?- প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যারা দেশের কল্যাণ চিন্তা করে তারা কখনো ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারে না।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, আইজিপি একেএম শহীদুল হক এবং অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. মোখলেসুর রহমান বক্তৃতা করেন।
এ ছাড়াও মহানগর পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম এবং অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান এবং গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুনুর রশীদ বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনার পর কোন এক দেশের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য ছিলো এই ঘটনা বাংলাদেশ সামাল দিতে পারবে না। এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সে একটি স্টেটাস দিয়েছিলো। কিন্তু আমরা সেটা পারলাম কয়েক ঘন্টার মধ্যে। তাতে মনে হলো কেউ কেউ খুশি হতে পারলো না।
তিনি বলেন, এরকম হবে আমরা তাদের কাছে আকুতি করবো, অমুকের কাছে চাইবো, এটা চাইবো, সেটা চাইব। কিন্তুু আমরা বাঙালিরা যে পারি, এখনো তারা চিনতে পারেনি।
হলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলা মোকাবেলায় পুলিশের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই জন পুলিশ জীবন দিয়ে গেছেন, কিন্তু তারা অনেকগুলো মানুষকে বাঁচিয়ে গেছেন, দেশের সম্মান বাঁচিয়ে গেছেন।
‘এটা হচ্ছে কর্তব্যবোধ, যে আপনারা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও দায়িত্ব পালন করেছেন’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।