ক্রাইমবার্তা রিপোট:মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, যেকোনো সম্পর্কে টানাপোড়েন থাকতেই পারে। তবে তা সুরাহার জন্য বিশ্বাস, সদিচ্ছা ও পদ্ধতি থাকতে হবে। আমি মনে করি আমাদের দুই দেশের মধ্যে প্রয়োজনীয় এসব উপাদান রয়েছে।
বাংলাদেশে দায়িত্ব নেয়ার দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ বুধবার ফেইসবুকে আয়োজিত চ্যাটে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। বেলা সাড়ে তিনটা থেকে এক ঘণ্টা এই চ্যাট চলে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে আমরা সমর্থন যোগাই না। একটি অধিকরত অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নিশ্চিতে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র সব বাংলাদেশীর সাথে কাজ করে।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে। এই প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে আমরা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও জনগনের সাথে কাজ করি।’
জনগণের ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং জঙ্গি দমনে সরকারের দৃঢ়তার কারণে বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে বলে আস্থা ব্যক্ত করেন বার্নিকাট।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারখানা নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশ ব্যাপক অগ্রগতি করেছে। তবে শ্রম অধিকার নিয়ে আরো কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের জন্য জিএসপি পুনর্বহাল করা হবে কি-না তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান জানতে অপেক্ষা করতে হবে।
প্রেসিডেন্ট ওবামার আমলে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের ট্রাম্প প্রশাসন প্রত্যাহার করে নেবে কি-না জানতে চাওয়া হলে বার্নিকাট বলেন, দল নির্বিশেষে যুক্তরাষ্ট্রের সব প্রেসিডেন্টই আগের আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের পদত্যাগ করার আহ্বান জানান। তবে আমার মত পেশাদার কূটনীতিকরা সাধারনত থেকে যান। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের অধীনে নিযুক্ত কূটনীতিকদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ রাষ্ট্রদূত পেশাদার।
রোহিঙ্গা সংকট সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা, অবাধ চলাচলের স্বাধীনতা, সামাজিক সেবা, জীবিকা এবং আইনের আওতায় ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকার নিয়মিত আহ্বান জানিয়ে আসছে।
বার্নিকাট বলেন, প্রতি বছর হাজার হাজার বাংলাদেশী নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাচ্ছে। বর্তমানে সাড়ে ছয় হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়ালেখা করছে। পর্যটন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্প। তাই আমরা সব দেশ থেকে সব ধরনের ভ্রমণকারীকে আমন্ত্রণ জানাই।
এনজিও এবং সরকারের সাথে অংশীদারীত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশের জনগণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিগত দুই বছর মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন একাধারে চ্যালেঞ্জিং ও আনন্দদায়ক ছিল। এখন ভবিষ্যতের পাণে চেয়ে আছি।’