ক্রাইমবার্তা রিপোট:গাজীপুর সংবাদদাতাঃ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নীলের পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতলা ভবনের ওয়ালে বড় বড় ফাঁটল দেখা দিয়েছে। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকায় শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে।স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী কোমল মতি শিশুদের পাঠ দান নিয়ে শিক্ষক,অবিভাবক ও এলাকাবাসি দুঃচিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়টিতে চলছে শিশুদের ঝুকিপূর্ণ পাঠদান।ভোগান্তিতে পড়ছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্থানীয়রা। এব্যাপারে এলাকাবাসী নতুন ভবন নির্মাণের দাবী জানিয়ে প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এলাকাবাসী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানায়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নীলের পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা প্রাণের ঝুকি নিয়ে প্রতিদিন ক্লাশ করছে। ১৯৩৬সালে স্থাপিত জেলা শহর এলাকার এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে স্থানীয় নীলের পাড়া গ্রামসহ আশেপাশের কয়েক গ্রামের পাঁচ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া করছে। বিদ্যালয়ের দু’টি ভবনের মধ্যে একটি এক তলা ভবন ও অপরটি দ্বিতল ভবন রয়েছে। এরমধ্যে অন্ততঃ দশ বছর আগে পুনঃনির্মিত দু’কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ভবনে মাত্র ৭০/৭৫ জন ছাত্র-ছাত্রী ক্লাশ করতে পারে।
বিদ্যালয়ের দ্বিচতল ভবনটি ফ্যাসিলিটিজ ডিপার্টমেন্ট ১৯৯৯ সালে নির্শাণ করে দেয়। বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হল গাজীপুর পৌর সভার চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় ১৯৯৮সালে এই ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে ১৯৯৯সালে তৎকালিন স্থানীয় এমপি মরহুম আহসান উল্লাহ মাষ্টার ওই নবনির্মিত দ্বিতল ভবনটির শুভ উদ্ভোধন করেন।
বর্তমানে বিদ্যালয়ের ওই দ্বিতল ভবনটির দেয়ালে ও ছাদের ভিতরে বাইরে বিভিন্নস্থানে বড় বড় ফাটল সৃষ্টি হয়েছে এবং প্লাস্টার ও ইট খসে পড়ছে। এতে যে কোন সময়ে ভ’মিকম্প, ঘূর্ণিঝড় বা কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে ভবনটি ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার আশংকা করছেন শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক ও স্থানীয়রা। স্কুলটির বেহাল দশার কথা উল্লেখ করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ইতোপূর্বে জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েছেন এবং প্রতিকারের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও এখন পর্যন্ত ওই আবেদনের কোন সাড়া মিলেনি। কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারনে ঝুকিতে পড়েছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাদের অভিভাবক ও এলাকাবাসি। ফলে বেহাল এভবনে মৃত্যুর ঝুকি নিয়ে ছাত্র ছাত্রীরা প্রতিদিন ক্লাশ করছে। যে কোন মুহুর্তে দূর্ঘটনার আশংকায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। ফলে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নানা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটিসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ এলাকাবাসী এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাহেলা বেগম ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খোকন জানান, আমরা বিদ্যালয়ের ভবনের ফাটলের ছবি ও বিভিন্ন তথ্যসহ স্থানীয় উপজেলা শিক্ষা ও ইজ্ঞিনিয়ার অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রায় বছর খানেক আগেই জমা দিয়েছি এবং ব্যাক্তিগতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার হচ্ছেনা। এদিকে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকায় ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। ফলে বিদ্যালয়ের পাঁচশতাধিক ছাত্র-ছাত্রীকে নিরাপত্তহীনতার মধ্য দিয়ে পাঠদান করতে গিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এতে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষাকার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আমরা এব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।