ট্রাম্পের ‘নিষ্ঠুর ও অসহিষ্ণু’ মুসলিম অভিবাসী নিষিদ্ধে স্বজন বিচ্ছিন্ন যারা

ক্রাইমবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক :মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে সাতটি মুসলিম দেশের অভিবাসীদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন, তাদের মধ্যে যারা দ্বৈতনাগরিক তারাও বিপাকে পড়েছেন। চারবার অলিম্পিক স্বর্ণ বিজয়ী দৌড়বিদ মো ফারাহ আছেন এখন ইথোপিয়ায়। সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তিনি। সোমালিয়ায় জন্ম নেওয়া এ দৌড়বিদ ব্রিটিশ নাগরিক ও বিয়ে করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে, থাকেন সপরিবারে অরিগনে। এখন ইথোপিয়া থেকে তিনি পরিবারের কাছে ফিরতে পারছেন না ট্রাম্পের অভিবাসী নিষিদ্ধের খপ্পরে পড়ে।
31
মো ফারাহ’র মত অনেকেই একই সংকটে পড়েছেন। ট্রাম্পের ভাষায় সাতটি বিপদজনক দেশ হিসেবে সিরিয়া, ইরান, ইরাক, সোমালিয়া, ইয়েমেন, লিবিয়া, সুদান ও সোমালিয়ার নাগরিক হওয়ার পর যদি অন্যকোনো দেশের নাগরিকত্ব থেকেও থাকে তাও তারা যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধের তালিকায় পড়ে গেছেন। এধরনের নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত তাদের ছেলে মেয়ে বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আর দেখা করতে পারছেন না।
ইরাকে জন্ম নেওয়া ব্রিটেনের টরি দলের এমপি নাদিম জাওয়াবি ও তার স্ত্রীর সমস্যা একই ধরনের। তারা তাদের ছেলে যে কি না যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে প্রিন্সটন ভার্সিটিতে পড়াশুনা করছে তার সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। নাদিম বলেন, জীবনে এই প্রথম এভাবে চরম বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছি।

হঠাৎ করে ট্রাম্পের অভিবাসী নিষিদ্ধের আদেশ কার্যকর হয়ে যাওয়ায় এয়ারপোর্টে আটকা পড়ছেন ওই সাতটি দেশের নাগরিকরা। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও ভার্জিন আটলান্টিকের মত এয়ারলাইন্স তাদের টিকিটের পয়সা ফেরত দিচ্ছে। এভাবে অনেকেই ট্রানজিট ট্রাপে আটকা পড়ছেন।

ব্রিটেনের বাসিন্দা হামাশে তায়ারির পাসপোর্ট ইরানের। কোস্টারিকা থেকে সে গ্লাসগোতে যেতে চাইলে তাকে আটকে দেওয়া হয়েছে কারণ তার ফিরে যাওয়ার ফ্লাইটটি অবতরণ করে আছে নিউইয়র্কে। এই নারী পশুচিকিৎসক বলেন, পরিস্থিতি আমাকে চরমভাবে আহত করেছে। মানুষকে জানাতে চাই আমরা এখন শরণার্থীতে পরিণত হয়েছি। গ্রাজুয়েট করার পর পিএইচডি করেছি, একজন মানুষ হিসেবে চমৎকার কাজ করছি, কর দিচ্ছি। তায়ারি বেড়ে উঠেছেন ইতালিতে।

বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদর জাফার আল-রিকাবি যিনি একাধারে ব্রিটিশ ও ইরাকি নাগরিক এবং তিনিও এধরনের চক্করে পড়ে আগামী মার্চে ওয়াশিংটন ডিসি’তে প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারছেন না। কিন্তু কেন? আমি নাকি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্যে হুমকি স্বরুপ।

ব্রিটিশ বাস্কেটবল তারকা লুওল ডেং যিনি সুদানে জন্মেছেন। তারও সমস্যা একই।

এধরনের অসংখ্য মানুষের কথা বলে শেষ করা যাবে না যারা শুক্রবার জারি করা ট্রাম্পের এমন আদেশের কারণে বিমান বন্দরে বা অন্য কোথাও আটক পড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় একটি আদালত বিমানবন্দরে আটকে পড়া এক অংশের আটকাদেশ অস্থায়ীভাবে স্থগিত করেছে। মাঝ আকাশে যারা আটকা পড়েছে বা যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে এমন হাজার হাজার মানুষের ভাগ্যে একই ধরনের বিড়ম্বনা ধেয়ে আসছে। ডেইলি মেইল

Check Also

স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় রিকশা চালালেন পাকিস্তানের হাইকমিশনার

ঢাকায় রিকশা চালাচ্ছেন পাকিস্তানি হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ! ভাবতে অবাক লাগলেও সম্প্রতি তেমনি এক ঘটনা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।