ট্রাম্পের মুসলিমবিরোধী আদেশের পর টেক্সাসের মসজিদে আগুন

ক্রাইমবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক :ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা মুসলিমবিরোধী নির্বাহী আদেশের কয়েক ঘণ্টার মাথায় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য টেক্সাসের একটি মসজিদে আগুন দেওয়া হয়েছে। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির বরাত দিয়ে সে দেশের সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ এই খবর জানিয়েছে। মসজিদটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে তারা। শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশে তিন মাসের জন্য ৭ মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে স্থগিতাদেশ দেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।ট্রাম্পের মুসলিমবিরোধী আদেশের পর টেক্সাসের মসজিদে আগুন

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কেএলএম নামের ওই বিমান সংস্থা তাদের জানিয়েছে, ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া দেশগুলোর সঙ্গে ওই ব্যক্তিদের নাগরিকতার মিল থাকায় তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে যাওয়া হয়নি। বিমান সংস্থার একজন মুখপাত্রের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভ্রমণে বাধা দেওয়া যাত্রীদের নাগরিকতা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মসজিদটিতে আগুন দেওয়া হয়। ৪ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। মসজিদের আগুন লাগার কারণ দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা, তা নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়, বেশ কয়েক বছর আগে একবার ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার শিকার হয়েছিল মসজিদটি। কিছুদিন আগে সেখানে চুরিও হয়েছিল।

৭ মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে স্থগিতাদেশ দেওয়ার পাশাপাশি শরণার্থী কর্মসূচি চার মাসের জন্য স্থগিত করেন ট্রাম্প। তবে সব শরণার্থীর বেলায়, কর্মসূচি স্থগিতের মেয়াদ নির্দিষ্ট ৪ মাস হলেও সিরিয়ার ক্ষেত্রে এই মেয়াদ অনির্দিষ্টকালের। প্রশাসনের শরণার্থী সীমিতকরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন নবনির্বাচিত এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। এই আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের ক্ষেত্রে মুসলিম প্রধান দেশগুলোর মুসলিমদের বদলে খ্রিস্টান ও সংখ্যালঘুদের প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলা হয়। এভাবেই, যেন শরণার্থীদের বিভাজন-সূত্র প্রকাশ করেন ‘বিভক্তির প্রেসিডেন্ট’!

অভিবাসন সীমিত করার নির্বাহী আদেশের কয়েক ঘণ্টা পরই আগুন দেওয়া হয় মসজিদটিতে। আগুন লাগার সময় মসজিদ প্রাঙ্গনে ছিলেন অনেকে। কিন্তু অসহায়ের মতো চোখের সামনে মসজিদ পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারেননি তিনি। কিছুই করতে পারেননি নিজের বিশ্বাসে থাকা উপাসনালয়টি পুড়ে যাওয়া ঠেকাতে।

মসজিদের প্রেসিডেন্ট শাহিদ হাশমি বলেন, ‘এখানে দাঁড়িয়ে মসজিদটি ধ্বংস হতে দেখা খুব কষ্টের। এটা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ’ কর্তৃপক্ষ এখনই কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন তারা। এদিকে ট্রাম্পের এ নির্বাহী আদেশ জারির পর পরই এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুমুল সমালোচনা চলছে।

দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স সিএআইআর-এর লেনা এফ মাসরি ক্ষোভ জানিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রবেশকারী শরণার্থীদের সবাই যে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছে, তেমন কোনও প্রমাণ নেই। ধর্মবিদ্বেষ থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বাস্তবসম্মতভাবে নয়। ’

Check Also

শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ঢাকার দেওয়া চিঠি গ্রহণ করেছে দিল্লি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ঢাকার দেওয়া কূটনৈতিক পত্র গ্রহণ করেছে দিল্লি। এ তথ্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।