ব্রিটেনে ট্রাম্পের সফরের বিরুদ্ধে ১২ ঘন্টায় ৮ লক্ষাধিক স্বাক্ষর

ক্রাইমবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মাত্র ১২ ঘন্টায় ব্রিটেনের ৮ লাখেরও বেশি মানুষ স্বাক্ষর করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশটি সফরের বিরোধিতা করেছে। এক লাখ মানুষ স্বাক্ষর করে কোনো আবেদন জানালে তা ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ৬ মাসের মধ্যে আলোচনার জন্যে গ্রহণ করার রীতি রয়েছে। ব্রিটিশ নাগরিকরা বলছেন, তাদের রানিকে বিব্রত না করার জন্যেই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেশটি সফরের আমন্ত্রণ জানানো উচিত নয়।
5
স্বাক্ষর গ্রহণ শুরু করার পর এক ঘন্টা কম সময়ের মধ্যে ১ লাখেরও বেশি মানুষ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ব্রিটেন সফর না করার আবেদনে স্বাক্ষর করে। এ স্বাক্ষর অভিযানের লক্ষ্যই ছিল বিষয়টি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আলোচনা করা। অধিকাংশ স্বাক্ষরদাতা হচ্ছেন লন্ডনের বাসিন্দা ও ছাত্র। সেদিক থেকে কোনো বিষয়ের উপর নাগরিক মতামত গ্রহণে স্বাক্ষর অভিযানে এটি এক রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। উপস্থাপক জার্মি ক্লার্কসন এ স্বাক্ষর অভিযানের উদ্যোগ নেন।

ধারণা করা হচ্ছে, সাতটি মুসলিম দেশের অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ ঘোষণার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এত ব্যাপকভাবে দ্বিমত প্রকাশ করলেন ব্রিটিশ নাগরিকরা। এত ব্যাপক হারে স্বাক্ষর দেওয়ায় অর্থাৎ প্রতি মিনিটে ১ হাজারের বেশি ব্রিটিশ নাগরিক ট্রাম্পের ব্রিটেন সফরের বিরুদ্ধে অভিমত দিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনি দেশটিতে কত অজনপ্রিয়। সেদিক থেকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে কোনো বিষয় নিয়ে বিতর্কের আবেদনে সাড়া পড়ার দিক থেকে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ জনমত হিসেবে রেকর্ড তৈরি করেছে।

মাত্র ৪৮ ঘন্টা আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে যখন যুক্তরাষ্ট্র সফরে ছিলেন তখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিটেন সফরের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। এমনকি ব্রিটিশ রাণির দেওয়া ট্রাম্পের আমন্ত্রণ পত্র গ্রহণের কথা জানান থেরেসা মে।

এর আগে ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেন বের হয়ে আসবে কি না তা পুনরায় গণভোটে দেওয়ার জন্যে ৪০ লাখ ব্রিটিশ নাগরিক এক আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ বছরেই ব্রিটেন সফর করবেন ও এজন্যে তার সফরের সময় ব্রিটেনে স্বাভাবিক পূর্ণ আড়ম্বর ও অনুষ্ঠানের বৈশিষ্ট নির্ধারণ করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সরকার। ঠিক এমন সময় ব্রিটিশ নাগরিকরা ট্রাম্পের সফর নিয়ে তাদের দ্বিমত প্রকাশ করলেন।

অবশ্য এও শোনা যাচ্ছে বিশ্ব উষ্ণতা নিয়ে প্রিন্স চার্লস যে শক্তিশালী অবস্থান নিয়েছেন তার কারণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে এড়িয়ে যেতে চান।

অনলাইন আবেদনের এ উদ্যোগে কাজ করেছেন লেবার পার্টি নেতা জেরেমি করবিন ও লিব ডেম, টিম ফ্যারন প্রমুখ। তারা বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আমন্ত্রণের মধ্যে দিয়ে রানিকে বিব্রত করা ঠিক হবে না। মার্কিন সরকারের প্রধান হিসেবে ট্রাম্প ক্ষমতার কারণে ব্রিটেন সফর করতেই পারেন, কিন্তু রাষ্ট্রীয় সফর হিসেবে ট্রাম্প ব্রিটেনে এলে তা রানিকে বিব্রত করবে। ট্রাম্প স্ত্রী বিদ্বেষ ও অশ্লীলতার পরিচয় দিয়ে ইতিমধ্যে যে অযোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন তার ফলে তাকে স্বাগত জানানো রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ অথবা প্রিন্স অব ওয়েলসের জন্যে অবমাননাকর। এজন্যে ট্রাম্পের শাসনামলে তাকে ব্রিটেনে সরকারি সফরের জন্যে আমন্ত্রণ না জানানোই হবে যুক্তিযুক্ত।

মি. করবিন বলেন, সাতটি মুসলিম দেশের অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় ট্রাম্পের ওপর আমি অসন্তষ্ট। মি. ফ্যারন বলেন, অনেক ব্রিটিশ নাগরিক যাদের তিনি ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন, যা তার ব্রিটেন সফরের মধ্যে দিয়ে রানিকে এক অসম্ভব অবস্থানে নিয়ে যাবে।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্যে আবেদনে যদি ১ লাখ মানুষ সাড়া দেয় তাহলে ৬ মাসের মধ্যে তা অবশ্যই এমপিরা বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক করবেন এমন বিধি রয়েছে। আর যদি আবেদনে স্বাক্ষরদাতার সংখ্যা ১০ হাজার হয় তাহলে তা আলোচনার জন্যে সময়ের অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু ট্রাম্পের ব্রিটেন সফর নিয়ে এত ব্যাপক সাড়া পড়ায় বিষয়টি এখন হাউস অব কমনস পিটিশন কমিটির সিদ্ধান্তের পর্যায়ে চলে গেছে। আর হাউস অব কমন্সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলে তাও হবে ট্রাম্পের জন্যে ভীষণ অবমাননাকর। ডেইলি মেইল

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।