ফোনে প্রেম, যমুনার চরে পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা

ক্রাইমবার্তা রিপোট:বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে কলেজ ছাত্রী সুরভী আকতার (২১) হত্যা রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। বেড়ানোর নামে প্রেমিকসহ ৬জন তাকে যমুনা নদীর দূর্গম বোহাইল চরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।1

ঘটনাটি পুলিশকে জানানোর হুমকি দিলে তারা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ একটি শাকক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায়। নিখোঁজের ৬ দিন পর পুলিশ তার পঁচন ধরা লাশ উদ্ধার করে।

গ্রেফতার তিনজনের মধ্যে দু’জন সোমবার বিকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রাতেই অপর একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ পলাতক তিন আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে।

এদিকে কলেজছাত্রী সুরভী হত্যা রহস্য উদঘাটন, তিন আসামি গ্রেফতার ও দু’জনের আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়ায় নিহতের স্বজন এবং গ্রামবাসীদের মাঝে স্বস্থি দেখা দিয়েছে।

গ্রেফতার আসামিরা হল-বগুড়ার ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া গ্রামের মৃত রোস্তম আলীর ছেলে প্রেমিক রডমিস্ত্রি মাসুদ রানা (২৫), তার বন্ধু একই উপজেলার হটিয়ারপাড়ার মৃত আবদুল হান্নানের ছেলে মামুন আহমেদ (১৯) এবং সারিয়াকান্দির জোড়গাছা গ্রামের মৃত ছবেদ আলীর ছেলে সাইদুর রহমান সাগর (২৬)।

সারিয়াকান্দি থানার ওসি এএসএম ওয়াহেদুজ্জামান জানান, উপজেলার জোড়গাছা সোনাপুর গ্রামের সুরুজ্জামানের মেয়ে পার্শ্ববর্তী গাবতলীর তরণীহাট ডিগ্রি কলেজে ডিগ্রি প্রথম বর্ষে পড়তেন। মোবাইল ফোনে মিসড কল থেকে দু’মাস আগে সুরভীর সঙ্গে মাসুদ রানার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্ক গভীর হলে রানা তাকে ধুনটে যমুনা নদীর বোহাইল চরে বেড়ানোর প্রস্তাব দেয়।

সুরভী তার কথায় বিশ্বাস করে গত ৪ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে কলেজ যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হন। তিনি ধুনটে গেলে রানা তাকে গোসাইবাড়ি ঘাটে নিয়ে যায়। এরপর তাকে নৌকায় যমুনা নদী পেরিয়ে বোহাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ ধারাবর্ষা ১ নম্বর গুচ্ছগ্রামের পাশে নিয়ে যান। সেখানে রানার বন্ধু মামুন ও সাগরসহ ৬ জন মিলে পালাক্রমে সুরভীকে ধর্ষণ করে।

ধর্ষণের পর সুরভী এ ব্যাপারে থানায় মামলা করার হুমকি দেন। এ নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রানা অন্যদের সহযোগিতায় সুরভীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর লাশ কলমি শাকক্ষেতে ফেলে সবাই পালিয়ে যায়। নিখোঁজের ৬ দিন পর ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ওইস্থানে সুরভীর পঁচন ধরা লাশ পাওয়া যায়। তবে তার মোবাইল ফোনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে তার বাবা পরদিন সারিয়াকান্দি থানায় হত্যা মামলা করেন।

ওসি আরও জানান, প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘাতকদের শনাক্ত করা হয়। গত সোমবার ভোরে ঢাকা থেকে প্রথমে রানা ও পরে তার স্বীকারোক্তিতে মামুনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এরা দু’জন সুরভীকে ফুসলিয়ে যমুনা নদীর বোহাইল চরে নিয়ে ধর্ষণ ও হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

সোমবার বিকালে দু’জনই বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রায়হান আহমেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবাববন্দি দেয়। এছাড়া অপর চার খুনি ও ধর্ষকের নাম প্রকাশ করে।

তাদের দেয়া তথ্য অনুসারে সোমবার রাতেই সারিয়াকান্দি থেকে সাগরকে গ্রেফতার করা হয়। তবে গ্রেফতারের স্বার্থে ওসি পলাতক তিনজনের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

Check Also

আশাশুনিতে টঙ্গী ইজতেমায় হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।ঢাকার টঙ্গীত ইজতেমা-মাঠে নিরীহ মুসল্লিদের উপর উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সাদ পন্থীদের বর্বরোচিত হামলা ও পরিকল্পিত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।