ক্রাইমবার্তা রিপোট:বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার জঙ্গিবাদ থেকে ফায়দা নিতে চায়। তাই সরকারই জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় ও লালন করছে।
আজ সোমবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ফাইটিং মিলিট্যানসি ইন কোয়েস্ট অব পিস’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ অভিযোগ করেন। বিএনপির ‘হিউম্যান রাইট সেল’ এটি প্রকাশ করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যেখানে গণতন্ত্র থাকবে না সেখানে টেররিজম, উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদের জন্ম হবে এবং সেটা আরও বিকশিত হবে। এটিই আসল কথা। এ কথাটি আমরা বারবার বলার চেষ্টা করেছি। এই টেররিজম মোকাবিলা করার জন্য দরকার জাতীয় ঐক্য।’
বিএনপি মহাসচিব জঙ্গিদের বিচারের আওতায় না আনার সমালোচনা করে বলেন, ‘যাদের জঙ্গি হিসেবে ধরা হলো, তাদের কেউ বেঁচে নেই। প্রত্যেককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সরকার জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে আন্তরিক হন, তাহলে এগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত এবং যারা দায়ী তাদের খুঁজে বের করেন। যে কাজটি বিএনপি করেছিল বাংলা ভাইকে ধরে। আপনারা (আওয়ামী লীগ) সেটা করছেন না ইচ্ছাকৃতভাবে।’
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, জনগণকে বোকা না বানিয়ে, প্রতারণা না করে সত্যিকার অর্থেই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দেন, যাতে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।’
ফখরুল বলেন, সন্ত্রাসবাদ কোনো দেশীয় বিষয় নয়, এটি আন্তর্জাতিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। নয়-এগারোর পর থেকে টেররিজম শব্দটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে এবং পৃথিবীর রাজনীতির চেহারা পাল্টে দিয়েছে। এর ফলে আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, মিশরের কি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘যে যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হতো গণতন্ত্রের আধার, সেই দেশে আজ মুসলিমদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। পরিবর্তনটা কোন জায়গায় চলে গেছে। মুসলিম থাকলেই টেররিজম আসবেই এই ধরনের চিন্তাভাবনা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘একজনের কাছে যেটা টেররিজম, অন্যের কাছে সেটা টেররিজম না-ও হতে পারে। যখন সিরিয়ায় নিরীহ শিশুকে হত্যা করা হয়, তখন টেররিজম বলবেন কাকে? যখন ফিলিস্তিনে ছোট্ট শিশুকে বোমা মেরে হত্যা করা হচ্ছে, তখন টেররিজম কাকে বলবেন? একইভাবে বাংলাদেশে যখন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী দ্বারা আমাদের মায়ের পেটের শিশু নিহত হয়, আমাদের সাংবাদিক ভাই গুলিতে নিহত হয়ে যান, সাংবাদিক দম্পতি যখন খুন হয়ে যান, টেররিজম কাকে বলবেন? যখন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করা লোকদের পুলিশের বুটের দ্বারা পিষে দেওয়া হয়, তখন সন্ত্রাসী কাদের বলবেন?’
অধ্যাপক মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার প্রমুখ।