ক্রাইমবার্তা রিপোট:মো:নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠি:: উন্নয়নের জোয়ারে ডিজিটাল যুগেও ঝালকাঠি-নলছিটির পানাবালিয়া-টেকেরহাট খালের কয়েকটি গ্রামের সংযোগ রক্ষাকারী টেকেরহাট সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ১৯৮৭ সালে নির্মিত সেতুটি প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ১০বছর পরেও সংস্কার কিংবা পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতুটি যেকোন সময় ভেঙ্গে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। জানা গেছে,২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রলয়ঙ্কারী সিডরের সময় একটি গাছ পড়ে সেতুটির পূর্ব পাশের বেশ কিছু অংশ ভেঙ্গে পানিতে তলিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত সেতুতে কাঠের পাতাটন,বাঁশ ও সুপারি গাছ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে কোনো রকমে পারাপার হচ্ছে স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ। দুই উপজেলার সংযোগ রক্ষাকারী ব্যস্ততম ও জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটি ওপর দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ পারাপারের ফলে বাঁশ ও সুপারি গাছ দিয়ে তৈরি সাঁকোটি কিছু দিন পর পরই ভেঙ্গে যায়। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,ঝালকাঠী সদর ও নলছিটি উপজেলার সংযোগস্থলে অবস্থিত টেকেরহাট-পোনাবালিয়া সেতুর পূর্ব পাশে নলছিটি উপজেলা ও পশ্চিম পাশে সদর উপজেলা। প্রায় ১৫০ফুট দৈর্ঘ্যরে সেতুটির অর্ধেকটা ভাঙ্গা। সেতুর পূর্ব পাশে টেকেরহাট বাজার এবং পশ্চিম পাশে হাজরাগাতী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কে এম খান মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রতিদিন শত শত ছাত্রছাত্রীসহ বাজারে আসা অসংখ্য লোকজন পার হচ্ছে সেতুটি দিয়ে। হাজরাগাতী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক মানিক লাল দাস বলেন,আমাদের বিদ্যালয়ে ১৯০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তাদের বেশির ভাগেরই বাড়ি সেতুর ওপারে। এদের ওপার থেকে আসতে অনেক সমস্যা হয়। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। প্রায়ই পার হওয়ার সময় সেতুটির বাঁশ এবং সুপারি গাছের কাঠামো অংশে বাঁশ ও সুপারি গাছের ফাঁকে শিশু শিক্ষার্থীদের পা আটকে যায় ও হাত পা কেটে যায়। কে এম খান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,আমাদের বিদ্যালয়ে ৭০০জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। যাদের মধ্যে অনেকেই সেতুর ওপারে নাচনমহল ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ও টেকেরহাট থেকে আসে। ফলে অনেক ছাত্রছাত্রীকে সেতু পার হয়ে স্কুলে আসতে হয়। স্কুল ছুটি হওয়ার পর আমরা শিক্ষকেরা সেতুটির ঢালে দাঁড়িয়ে থেকে ছাত্রছাত্রীদের পার করে দেই। কারন অধিক সংখ্যায় পার হওয়ার সময় সেতুটি কাঁপতে থাকে এবং ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়। এলাকাবাসীরা জানান,ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয়রা মিলে বাঁশ ও সুপারি গাছ দিয়ে যে ব্যবস্থা নিয়েছি তা কোন কাজে আসছে না। বৃষ্টিতে এগুলো পঁচে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে(এলজিইডি) জানিয়েছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে মৌখিকভাবে কয়েকবার জানানো হয়েছে। তিনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। সাংবাদিকদের মাধ্যমে শীঘ্রই জনগুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি দ্রুত পুনর্নিমাণ করার দাবি করেন এলাকাবাসী। এলজিইডির নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহ বাকী জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন,পোনাবালিয়া-টেকেরহাট সংযোগ সেতুর বিষয়ে আমরা অবগত আছি। এ ব্যাপারে একটি প্রকল্প তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
মো:নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠি: চলন্ত বাস থেকে ৪ ছাত্রকে ফেলে দিয়ে আহত করার প্রতিবাদে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় কলেজ ছাত্রদের সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে ওসি মুনির উল গিয়াসের নেতৃত্বে পুলিশ লাঠি চার্জ করেছে বলে অভিগোগ পাওয়া গেছে। এতে ৬ ছাত্র আহত হয়েছে। পুলিশের সাথে ছাত্রদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার রাজাপুর ডিগ্রী কলেজের সামনে রাজাপুর- ভান্ডারিয়া সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আহত কলেজছাত্র নাঈম মাহমুদ বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে রাজাপুর ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের ৪ ছাত্রকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয় বাসের সুপারভাইজার ও হেলপার। এতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৪ ছাত্র। আর তার প্রতিবাদে বুধবার সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালনকালে পুলিশ ছাত্রদের ওপর লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। লাঠিচার্জে কমপক্ষে ৬ ছাত্র আহত হয়, দাবী নাঈম মাহমুদের। এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর ১২টার থেকে আঘাঘন্টা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালনকালে রাজাপুর ভান্ডারিয়া সড়কে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় দূরপাল্লার অসংখ্য বাসসহ যানবাহন আটকে পড়ে। পরে পুলিশের লাঠিচার্জে অবরোধকারী ছাত্ররা ছত্রভঙ্গ হলে সড়কে যানচলাচল শুরু হয়। এ ব্যাপারে রাজাপুর থানার পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) শেখ মুনীর উল গিয়াস বলেন, ছাত্রদের ওপর লাঠি চার্জ করা হয় নি। সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে পুলিশের সাথে ছাত্রদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে স্বীকার করেন পরিদর্শক মুনীর উল গিয়াস। এদিকে আন্দোলনরত ছাত্ররা আরও জানায়, ঝালকাঠি-ভান্ডারিয়া রুটের নূর-নোহা নামের একটি বাসে মঙ্গলবার দুপুরে রাজাপুর ডিগ্রী কলেজের সামনে থেকে ওই কলেজের একাদশ শ্রেণির ৪ ছাত্ররা গালুয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসে ওঠে। পথিমধ্যে চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালালে নারী যাত্রীরা প্রথমে এর প্রতিবাদ করে। কিন্তু এতে চালক ক্ষিপ্ত হয়ে বাসের গতি আরো বাড়িয়ে দেয়। পরে বাসটি উপজেলার কৈবর্তখালী এলাকার একটি নির্মানাধীন কালভার্ডের কাছে পৌছালে সেখানে থাকা গতি রোধকে গাড়ির গতি না কমিয়ে দ্রুত যাওয়ার সময় বাসের সাথে ধাক্কা লেগে গিয়াস ও মেজবাহ নামে দুই ছাত্রের মাথা ফেঁটে যায়। এরপর কিছু দূর গিয়ে ওই ৪ ছাত্রকে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে চালক ও হেলপার রাস্তায় ফেলে দেয়। এতে ৪ ছাত্ররই আহত হয়। তাদেও মধ্যে ২জনকে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।