ক্রাইমবার্তা রিপোট:জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পক্ষে সময়ের আবেদন গ্রহণ করে পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছে আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার এদিন ধার্য করেন।
আজ আদালতে খালেদা জিয়ার উপস্থিত হওয়ার দিন ধার্য ছিল। তিনি অসুস্থজনিত কারণে আদালতে উপস্থিত হতে না পারায় সময়ের আবেদন করেন আইনজীবী জমির উদ্দিন সরকার, এ জে মোহাম্মদ আলী, আব্দুর রেজাক খান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া মাসুদ ও আহেমদ তালুকদার। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে ১৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছে।
বৃহস্পতিবার অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়ার ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থন ও চ্যারিটেবল মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে অসমাপ্ত বক্তব্য প্রদােনর দিন ধার্য ছিল। তবে তার অনুপস্থিতিতে সময়ের আবেদন জানান খালেদার আইনজীবী এর বিরোধিতা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
সময়ের আবেদনে খালেদার অসুস্থতা ও এ আদালত পরিবর্তনে উচ্চ আদালতে করা তার আবেদন শুনানির অপেক্ষায় থাকার কথা উল্লেখ করা হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদারের আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে এ মামলা অন্য আদালতে স্থানান্তরের আবেদন করেছেন তিনি।
আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিচারপতি মো: রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এই আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। গত 8 ফেব্রুয়ারি আদালত শুনানির এ দিন ধার্য করেন।
আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আবেদনে বলা হয়েছে, আদালতে আরো অনেক মামলা বিচারাধীন। সেসব মামলায় এক-দেড় মাস পরপর দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার মামলা কোনো কোনো সপ্তাহে দুই দিন ধার্য করা হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের মতো তিনি ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্যই তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে। এই আদালতে খালেদা জিয়া ন্যায় বিচার পাবেন না।
আবেদনে আরো বলা হয়, এই মামলার দুইবার তদন্ত হয়েছে। প্রথম দফায় দুদকের কর্মকর্তা নূর আহমেদ মামলার অভিযোগ থেকে খালেদা জিয়াকে অব্যাহতি দিয়েছেন। ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার জন্য কুয়েতের আমির অর্থ দিয়েছেন। কিন্তু দুদক এই মামলায় নতুন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে হারুনর রশিদকে নিয়োগ দেন। এই তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদনে বলেছেন, টাকা এসেছে সৌদি আরব থেকে। এখানে খালেদা জিয়া জড়িত। এ অবস্থায় খালেদা জিয়া পুনরায় তদন্ত চেয়ে আবেদন করলে সেই আবেদনও খারিজ করে দেন আদালত।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার একটি অংশের বিষয়ে তদন্তের জন্য বিচারিক আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত তা নিষ্পত্তি না করে ৩৪২ ধারায় বক্তব্য পরীা করার জন্য রাখেন। এরপর আমরা ওই আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে একটি আবেদন দিই। আবেদনটি খারিজ করেন আদালত। এরপর আদালত বদলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদনটি করেন খালেদা জিয়া। এ আবেদনে মামলাটি কেন ওই আদালত থেকে অন্য আদালতে বদলির নির্দেশ দেয়া হবে না, এ মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় মামলার কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে।
গত ২ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া আদালতের ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় বিচারকের প্রতি অনাস্থা দেন। তবে আদালত অনাস্থার আবেদন নাকচ করে দেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় আরো একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।