ক্রাইমবার্তা রিপোট:বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এদেশে নির্বাচনী উৎসবকে তিনি কারবালার মতো শোকের মাতমে পরিণত করেছেন কাজী রকিব উদ্দিন। এ জন্য জাতি তাকে কোনদিন ক্ষমা করবে না। এবারো যিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন সেটি আওয়ামী দলীয় চেতনায় কাজী রকিব উদ্দিন এর চেয়েও আরো কয়েক ধাপ অগ্রবর্তী। নূরুল হুদা কমিটেড আওয়ামী লীগার। তার অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে দেশের মানুষের মধ্যে আস্থার সৃষ্টি হয়নি। তার অতীত কর্মকান্ড এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষনার পরপরই তার বিভিন্ন বক্তব্যে তিনি যে কমিটেড আওয়ামী লীগার সেটি ফুটে উঠেছে। তার অধীনে নির্বাচন হলে সেটি ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনই হবে।
আজ শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন ও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে তারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সে সময় তিনি বলেছেন বিএনপি গত নির্বাচনে অংশ না নিয়ে যে ভুল তারা করেছে, এর পরিণাম তাদের যতটা দুর্বল, সংকুচিত করেছে, এলোমেলো করেছে, সেখানে তাদের ভবিষ্যতে রাজনৈতিক অঙ্গনে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়ার একটা ঝুঁকি রয়েছে।’
কিন্তু আমি বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে বলতে চাই-একবার আপনার প্রধানমন্ত্রীকে বলুন গদি ছেড়ে দিয়ে একটি অন্তবর্তিকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে সেই সরকারের মাধ্যমেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে, তাহলেই বোঝা যাবে কোন দল রাজনৈতিক প্রাঙ্গনে অপ্রাসঙ্গিক হয়েছে। কার ভুল হয়েছে বিএনপি না আওয়ামী লীগ, সেটি জনগণই বিচার করবে। নির্বাচনে আপনাদের জামানত বাঁচবে কী না সেই ব্যাপারে প্রচেষ্টা গ্রহণ করুন। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদুতের সাথে একমত, তিনি বলেছেন-বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
বর্তমান সরকারের আমলে সাংবাদিক নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে রিজভী বলেন, গত পাঁচ বছরেও সাংবাদিক সাগর-রুনি দম্পতি হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি। সরকারের সীমাহীন অবহেলায় ধামাচাপা দেয়ার চক্রান্ত্রের আবর্তে পড়ে আছে সাগর-রুনী হত্যা মামলাটি। গত পাঁচ বছরে ৪৬ বার সময় নিয়েও আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে ও সরকারের হুকুমে রকিবউদ্দিন নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। রক্তরঞ্জিত করেছেন ভোট ব্যবস্থাকে। এদেশে নির্বাচনী উৎসবকে তিনি কারবালার মতো শোকের মাতমে পরিণত করেছেন। তিনি ৫ জানুয়ারী তামাশার নির্বাচনসহ সকল নির্বাচনে লাশ ও রক্তাক্ত নির্বাচন উপহার দিয়েছেন। যেটি ইতিহাসে বিবর্ণ কালো অধ্যায় হয়ে রয়েছে। জাতি কাজী রকিবউদ্দিনকে কোনদিন ক্ষমা করবে না। এবারেও যিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন সেটি আওয়ামী দলীয় চেতনায় কাজী রকিবউদ্দিন এর চেয়েও আরো কয়েক ধাপ অগ্রবর্তী। তার অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে দেশের মানুষের মধ্যে আস্থার সৃষ্টি হয়নি। তাঁর অতীত কর্মকান্ড এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষনার পরপরই তাঁর বিভিন্ন বক্তব্যে তিনি যে কমিটেড আওয়ামী লীগার সেটি ফুটে উঠেছে। তাঁর অধীনে নির্বাচন হলে সেটি ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনই হবে। তাতে বর্তমান বিরাজমান দু:শাসন আরো দীর্ঘদিন টিকে থাকবে। তাঁর অধীনে নির্বাচন হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনুকুলে অসুদোপায় অবলম্বন করে তিনি যে ভোট ও নির্বাচনী ব্যবস্থাকে চূড়ান্তভাবে নির্মূল করার বিপজ্জনক প্রতিজ্ঞা নিয়ে কাজ করবেন না সেটি কে বলতে পারে? সুতরাং জনমতের প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি সাংবিধানিক পদ থেকে সরে দাঁড়ালে জাতি তাঁকে স্বাগত জানাবে।