‘আপনারা চাইলে আমি পদত্যাগ করতে পারি’

ক্রাইমবার্তা রিপোট:নিম্ন  আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি চূড়ান্ত করতে রাষ্ট্রপক্ষের লিখিত সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরো দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গতকাল রোববার গেজেট প্রকাশ করতে সময়ক্ষেপণের কারণ জানতে চান আপিল বিভাগ। আজ সোমবার আদালতকে  এ বিষয়ে লিখিতভাবে  রাষ্ট্রপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছিল।6

এদিন শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে গেজেটের একটি খসড়া রয়েছে। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এটি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। এ জন্য সময় প্রয়োজন।’

এ সময় আদালত বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে আছে- এ কথা আর কতদিন শোনাবেন। বারবার সময় আবেদনের সময় একই কথা বলেছেন। ’

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমি তো আর রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিতে পারি না। আপনারা চাইলে আমি পদত্যাগ করতে পারি। এ ছাড়া আর কী করতে পারি।’ জবাবে আদালত বলেন, ‘আমরা তা বলছি না।’

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল ছয় সপ্তাহ সময় আবেদন করলে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আট সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ দুই সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করেন।

আপিল বিভাগের বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মো. নিজামুল হক।

এই শুনানির আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি এক সপ্তাহ সময় দেন আদালত। এর আগে আরো কয়েকবার সময় দেওয়া হয়েছিল।

১৯৮৯ সালে সরকার বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কিছু পদের বেতন স্কেল বৃদ্ধি করে। এতে অন্য ক্যাডারদের সঙ্গে অসঙ্গতি দেখা দেয়। তৎকালীন সরকার এই অসঙ্গতি দূর করার জন্য ১৯৯৪ সালের ৮ জানুয়ারি জজ আদালতের বেতন স্কেল বাড়িয়ে দেয়। প্রশাসন ক্যাডারের আপত্তির মুখে সরকার ওই বেতন স্কেল স্থগিত করে।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মাসদার হোসেনসহ ৪৪১ জন বিচারক ১৯৯৫ সালে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা দায়ের করেন।

দীর্ঘ শুনানি শেষে ১৯৯৭ সালে হাইকোর্ট পাঁচ দফা সুপারিশসহ ওই মামলার রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে আপিল বিভাগ ১৯৯৯ সালে ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করার রায় দেন।

মাসদার হোসেন মামলার রায় ঘোষণার আট বছর পর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করা হয়। ওই সময় যে চারটি বিধিমালা গেজেট আকারে জারি করা হয়েছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরি, নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা বিধান এবং চাকরির অন্যান্য শর্তাবলি) বিধিমালা, ২০০৭ একটি। যেখানে বলা হয়েছে পৃথক বিধি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত অধঃস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধান করা হবে ১৯৮৫ সালের গভর্নমেন্ট সার্ভিস রুলস অনুযায়ী।

তবে মাসদার হোসেন মামলার রায়ের ৭ নম্বর নির্দেশনা অনুযায়ী সেই জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের জন্য পৃথক শৃঙ্খলা বিধি এখনো তৈরি হয়নি।

Check Also

৩০ জুলাই পর্যন্ত অনেক দল সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, সংগ্রামে যুক্ত হবে কি না: সারজিস আলম

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।