ক্রাইমবার্তা রিপোট:বেসামরিক বিমান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে মানুষের জীবন ঝুঁকিতে ফেলার ঘটনা প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫ কোটি টাকা জরিমানার বিধান যুক্ত করে নতুন আইন হচ্ছে। সর্বোচ্চ এই শাস্তির বিধান রেখে বেসামরিক বিমান চলাচল আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
আজ সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘বেসামরিক বিমান চলাচল আইন ২০১৭’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর আগে মৃত্যুদ-ের বিধান ছাড়া খসড়াটি গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভায় নীতিগত ও পরে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের আইনি মত (ভেটিং) শেষে এটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় সংসদে ওঠানোর আগ মুহূর্তে সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়টি নতুনভাবে সংযোজন করে বিভিন্ন অপরাধে সাজার মাত্রা বাড়ানো হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৬০ সালের ‘দ্য সিভিল এভিয়েশন অর্ডিন্যান্স’ হালনাগাদ করে এই খসড়া তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে সাজাও বাড়ানো হয়েছে এ খসড়ায়। নতুন আইনে বিমান হ্যাঙ্গারে থাকা অবস্থা থেকে শুরু করে অবতরণ পর্যন্ত যেকোনো পর্যায়ে ইচ্ছাকৃত বা বেপরোয়াভাবে এমন কোনো কাজের জন্য কারও জীবন ঝুঁকির মুখে পড়লে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অনধিক পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ড। নতুন আইনে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির অর্থাৎ কোনো পাইলট বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বিপজ্জনকভাবে বিমান চালালে এবং তা প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
শফিউল আলম বলেন, আইনের খসড়ায় এয়ার নেভিগেশন অর্ডার’ অর্থাৎ, বিমান চালানোর অনুমতির বিধান লঙ্ঘন বা সনদ জাল করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর সশ্রম কারাদ-, সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে । তিনি বলেন, বিমানের নেভিশগনের সঠিক আলো ও সংকেতের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে। আইন অনুযায়ী বিমানের নেভিগেশনে হস্তক্ষেপ বড় ধরনের অপরাধ। কেউ বিমান ভ্রমণের সময় বিপজ্জনক পণ্য বহন করলে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ডের সঙ্গে ৫০ লাখ টাকা জরিমানার মুখে পড়বেন এই আইন হলে।
মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন, বিপজ্জনক পণ্যের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, এমন কোনো দ্রব্য বা বস্তু, যা স্বাস্থ্য, সম্পত্তি বা পরিবেশের ক্ষতি করতে পারে অথবা এসবের জন্য ঝুকিপূর্ণ বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ যেসব পণ্য বিপদজনক হিসেবে চিহ্নিত করেছে, সেগুলোও এই তালিকায় থাকবে। এ আইন পাস হলে অবৈধভাবে বাংলাদেশের আকাশসীমায় প্রবেশের জন্য তিন থেকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা গুণতে হবে। এ ছাড়া বিমানের নেভিগেশনের সঠিক আলোক বা সংকেতের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। যদিও বর্তমানে বাংলাদেশের আকাশসীমায় অবৈধভাবে ঢুকে পড়লে শাস্তির বিধান নেই। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কিছু নির্দেশনাও নতুন প্রস্তাবিত আইনে যুক্ত করা হয়েছে।