ক্রাইমবার্তা রিপোট:রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি :ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবিব রুবেলের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ৩০/৪০ জনের একটি দল রোববার ভোররাত ৪টার দিকে রাজাপুর ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন পশ্চিম পাশের এলাকার ফারুক সিকদারের বাড়ি দখল ও বসতঘর ভাঙচুরকালে পুলিশের হাতে ছাত্রলীগ সভাপতি ও তার মা হোসেনেয়ারা বেগমসহ ৫ আটক হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে, ১০ লাখ টাকা চাদার দাঁবিতে ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেল তার ভাডাটিয়া দলবল নিয়ে ওই বাড়িতে এ হামলা, লুটতরাজ ও ভাঙচুর চালায়। হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নারীসহ ৭ জনকে আহত করেছে বলে অভিযোগ আহতদের। এ ঘটনায় রোববার দুপুরে ফারুকের ভাই এসএম হুমায়ুন কবির বাদি হয়ে রাজাপুর থানায় মামালা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আহতরা হল- ফারুক সিকদারের স্ত্রী গৃহকর্তী সাহেরা বেগম (৪৬), ফারুকের ভাই মান্নান হোসেন (৩৮), মান্নানের স্ত্রী কবিতা বেগম (২৭), ফারুকের আত্মীয় উপজেলার চারাখালি গ্রামের মৃত আফসার মোড়লের স্ত্রী সালেহা গেম (৬৫), হুমায়ুন ফরাজির স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৩০), মৃত খলিলুর রহমানের স্ত্রী আম্বিয়া বেগম (৭০) ও পুটিয়াখালি গ্রামের আবু জাফরের স্ত্রী শারমিন বেগম (৩০)। আহতরা রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি। আটকৃতরা হল- ডিগ্রি কলেজ এলাকার তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবিব রুবেল (২৮), রুবেলের মা হোসনেয়ারা বেগম (৪৫), মনোহরপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে আবু সালেহ হাওলাদার (২৩), জামাল খালিফার স্ত্রী শারমিন বেগম (২৬), দক্ষিণ তারাবুনিয়া গ্রামের বাবুল সিবদারের ছেলে নজরুল ইসলাম (২৬)। ক্ষতিগ্রস্থ ফারুকের স্ত্রী চিকিৎসাধীন সাহেরা বেগম অভিযোগ করে জানান, ডিগ্রি কলেজের পশ্চিম পাশের এলাকার খালেক ও হাতেম মেম্বরের কাছ থেকে ২০/২৫ বছর আগে ২১ শতাংশ জমি ক্রয় করে ঘর উত্তোলন এবং গাছপালা রোপন করে ভোগদখল করে আসছিলো। সম্প্রতি ওই জমিতে নতুন করে সংস্কার করে ঘর উত্তোলন কাজ শুরু করলে প্রতিপক্ষ তোফাজ্জেল ও তার ছেলে ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেলসহ তাদের লোকজন ভূয়া একটি কাগজ দেখিয়ে ওই জমি তাদের দাবি করে ঘর উত্তোলনে বাধা দেয় এবং ঘর উত্তোলনে বাধা দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদাদাবি করে আসছিলো। এ বিষয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এসএস হুমায়ুন কবির। এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি তোফাজ্জেলকে আহত সাজিয়ে রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করে ফারুক ও তার আত্মীয়স্বজনদের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। সাহেরা বেগম আরও অভিযোগ করে জানান, এসব ঘটনার জের ধরে রোববার ভোররাত ৪ টার দিকে ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেলের নেতৃত্বে অর্ধধত লোকজন ওই বাড়ি দখল, বসতঘর ভাঙচুর ও তাদের ওপর হামলা চালিয়ে ৪ ভরি সোনার অলঙ্কার ও ৭টি মোবাইলসহ মালপত্র লুটপাট করে এবং সাহেরা বেগমের গলায় রামদা ধরে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে। প্রতিবেশী কয়েকজন জানান, ভোররাতে ওই বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের শব্দ শুনে বাহিরে বের হওয়ার চেষ্টা করলে মুখোশধারী বেশ কয়েকজন যুবক এসে তাদের হুমকি দিয়ে চুপ করে ঘরে বসে থাকতে বলে। তখন চট্রগ্রামে থাকা ফারুককে প্রতিবেশীরা ফোন দিয়ে এ ঘটনা জানালে ফারুক পুলিশে খবর দেন। থানায় আটকরত অবস্থায় উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবিব রুবেল অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করে বলেন, ‘‘শনিবার দুপুরে রুবেল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ছিলাম। রাতে বাসা থেকে আমাকে ও আমার মাকে পুলিশ বাসা থেকে ধরে থানায় নিয়ে আসে’’। রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, খবর শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলা ও ভাঙচুররত অবস্থায় হাতে নাতে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেল ও তার মা হোসনেয়ারা বেগমসহ ৫ জনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় মামলা রেকর্ডের প্রস্তুতি চলছে।
Check Also
আশাশুনির প্রতাপনগরে ৫ আগস্ট বন্দুকের গুলিতে নিহত ৩ শহীদের অভিভাবকদের সংবাদ সম্মেলন
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।। গত ৫ আগষ্ট-২০২৪ আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরে আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান …