ক্রাইমবার্তা রিপোট:বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে এটি স্পষ্ট হচ্ছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তারা নতুন নতুন ষড়যন্ত্র আঁটছেন। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন তাতে সুস্পষ্টভাবে আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার। তাহলে কী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন?
আজ রোববার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন। এসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, ভোটারবিহীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও দলের শীর্ষ নেতারা বেগম খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করছেন। গত শুক্রবারও জার্মানির মিউনিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন প্রমাণিত হলে খালেদা জিয়ার শাস্তি হবেই। সেখানে তিনি আরো বলেন-জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাসহ চলমান বিচারাধীন মামলাগুলো সবই ১/১১-তে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা, কিন্তু বাস্তবে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাসহ বেশীর ভাগই করা হয়েছে ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। দুদককে ব্যবহার করে এই মামলার চার্জশিটও দেয়া হয়েছে তাদেরই আমলে। এমনকি যে মামলাগুলো ১/১১ সরকারের সময় উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত ছিল সেই মামলাগুলোও তারা পূণরায় চালু করেছে।
তিনি বলেন, অথচ একই মামলাগুলোতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীরও নাম ছিল এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে ১/১১ এর সরকার যতগুলো মামলা দিয়েছিল তার তিনগুন মামলা দায়ের করা হয়েছিল বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তিনি ১৫টি মামলা মাথায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। সেই মামলাগুলি হাওয়ায় উড়ে গেল কিভাবে? প্রধানমন্ত্রী তো আইন মোকাবিলা করে সে মামলাগুলো থেকে মুক্ত হননি। সেই সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির অনেক মামলাতেই স্বয়ং তার ভাই এবং তার দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক যেসব বক্তব্য দিয়েছিলেন তা দেশবাসী ভুলে যায়নি। এর চেয়ে বড় সাক্ষী আর কী হতে পারে? কিন্তু ক্ষমতাসীন হয়েই শেখ হাসিনার মামলাগুলি প্রত্যাহার হয়ে গেল কোন যাদু মন্ত্রবলে? সুতরাং বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলাই রাজনৈতিক এবং তা হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। শুধু বিএনপি চেয়ারপারসনের হয়রানি করার জন্য তার বিরুদ্ধে মামলাগুলো চলমান রাখা হয়েছে।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী মনে করেন আইন, বিচার, প্রশাসন সবকিছুই তার করায়ত্বে, সেজন্য মামলা ও শাস্তি দেয়া তার ইচ্ছার ওপরই নির্ভর করে। তিনি নির্ধারণ করেই দিয়েছেন-বিরোধী দল হলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে। আর আদালত কর্তৃক সাজা হলেও মন্ত্রীরা তাদের মন্ত্রীত্ব বহাল রাখতে পারবেন।
তবে সারাদেশের মানুষ আওয়ামী ষড়যন্ত্রের সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। কারণ সরকার এসমস্ত চক্রান্ত ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল তৈরী করছেন শুধুমাত্র নিজেরা খাদের কিনার থেকে পুনরুজ্জীবনের ব্যর্থ চেষ্টার জন্য। অতি দানবে পরিণত হওয়া আওয়ামী দুঃশাসনে মানুষের বিপন্ন অস্তিত্বকে আড়াল করার জন্যই ক্ষমতাসীন মহল বিএনপি ও এর চেয়ারপারসনকে নিয়ে মিথ্যাচারের কোরাস গেয়ে যাচ্ছেন।