ক্রাইমবার্তা রিপোট:পুরনো ঢাকা দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলার ডেথরেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুত হয়েছে। আজ রোববার হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) সাব্বির ফয়েজ সাংবাদিকদের জানান, বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়।
তিনি জানান, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নির্দেশের পরই হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে এ মামলার পেপার বুক প্রস্তুতের জন্য বিজি প্রেসে পাঠানো হয়। ইতোমধ্যেই বিজি প্রেস এই মামলার পেপার বুক প্রস্তুত করেছে। এখন দ্রুত শুনানির জন্য নথি প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করা হবে। প্রধান বিচারপতি ডেথ রেফারেন্স মামলার শুনানি এখতিয়ার আছে এমন বেঞ্চে প্রেরণ করলে সেখানে শুনানি হবে।
২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর বহুল আলোচিত দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবিএম নিজামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার ডেথরেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি নিম্ন আদালতের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা।
মৃতুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন, সাইফুল ইসলাম, কাইয়ুম মিঞা টিপু, রাজন তালুকদার এবং মীর মো. নূরে আলম লিমন।
এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন এএইচএম কিবরিয়া, ইউনুস আলী, তারিক বিন জোহর তমাল, গোলাম মোস্তফা, আলাউদ্দিন, ওবায়দুর কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, আল-আমিন, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, মোশাররফ হোসেন ও কামরুল হাসান। এ ছাড়া তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়।
বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ মার্চ ছাত্রলীগের ২১ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই ২১ আসামির মধ্যে আটজন কারাগারে এবং বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে পথচারী বিশ্বজিৎ দাসকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীরা নির্মমভাবে পেটান ও কোপান। বাঁচার জন্য দৌড় দিলে তিনি শাঁখারীবাজারের রাস্তার মুখে পড়ে যান। রিকশাচালক রিপন তাকে রিকশায় তুলে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক বিশ্বজিৎকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার সময় বিশ্বজিৎ লক্ষ্মীবাজারের বাসা থেকে শাঁখারীবাজারে নিজের দর্জি দোকানে যাচ্ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর।