ক্রাইমবার্তা রিপোট:জুতা পায়ে শহীদ বেদিতে ধোবাউড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও ঘোষগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া।
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় জুতা পায়ে শহীদ বেদিতে উঠে সমালোচিত হচ্ছেন রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া নামের এক মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ধোবাউড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও ঘোষগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একুশের প্রথম প্রহরে ধোবাউড়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান রফিক উদ্দিন। সেখানে তিনি জুতা পায়ে ফটোসেশনে অংশ নেন। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডারের পাশে খালি পায়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল হোসেন খান, উপজেলা চেয়ারম্যান মজনু মৃধাসহ অনেকেই।
এদিকে শহীদ বেদিতে একজন মুক্তিযোদ্ধার জুতা পায়ে ওঠায় নিন্দার ঝড় বইছে বিভিন্ন স্থানে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও দেলোয়ার হোসেন বলেন, শ্রদ্ধা নিবেদনের আগেই জুতা পায়ে শহীদ বেদিতে না ওঠার ব্যাপারে মাইকে অনুরোধ করা হয়েছিল। এরপরও একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে তিনি যে কাজটি করেছেন, তা গর্হিত অন্যায় ও শহীদদের প্রতি চরম অবমাননাকর।
ধোবাউড়া থানার ওসি শওকত আলম বলেন, বিষয়টি ঠিক হয়নি।
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বলেন, জুতা পায়ে শহীদ বেদিতে ওঠা অনুচিত। এটি রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতিবিরোধী কাজ। ভাষাশহীদদের প্রতি এই অশ্রদ্ধা মানা যায় না।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) জেলা সভাপতি এমদাদুল হক মিল্লাত বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, ভাষাশহীদরাও। শহীদ মিনারকে সম্মান করা সবারই উচিত। আর মুক্তিযোদ্ধারা যদি ভাষাশহীদদের জন্য নির্মিত বেদিতে জুতা পায়ে ওঠেন, তা গর্হিত অন্যায়। এ ধরনের ঘটনায় সাধারণ মানুষ বিস্মিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া এনটিভিকে বলেন, ‘একুশের প্রথম প্রহরে আমি শহীদ মিনারে ফুল দিই। পরে ফিরে আসার সময় আমি ইউএনও সাহেবের কাছে বিদায় নিতে যাই। সে সময় সেখানে সবাই ছবি তুলছিলেন। ছবি তুলতে গিয়ে কখন শহীদ বেদিতে উঠে গেছি, আমি নিজেও লক্ষ করিনি।’
কথা বলার মধ্যেই এ প্রতিবেদককে রফিক উদ্দিন বারবার বলেন, ‘আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাই।’