একতরফা নির্বাচনের চেষ্টা হলে গণঅভ্যুত্থান হবে : মোশাররফ

ক্রাইমবার্তা রিপোট:বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, নতুন নির্বাচন কমিশন রকিবুদ্দিনের মতো নির্বাচন করে কি না বিএনপি তা দেখতে চায়। যদি সরকার আবারো একতরফাভাবে নির্বাচন করতে চায় তাহলে দেশে অবধারিতভাবে গণঅভ্যুত্থান হবে। ফলে দেশে কোনো নৈরাজ্যের সৃষ্টি হলে তার দায় দায়িত্ব এককভাবে শেখ হাসিনাকে নিতে হবে।

আজ বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটেতে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত ‘পিলখানা ট্রাজেডি- কেন এই সেনা হত্যা? কার স্বার্থে?’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ঢাকা মহানগরের নেতা আসাদুর রহমান প্রমুখ।

ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে বিডিআর বিদ্রোহের ফলে যে ঘটনা সেদিন ঘটেছে এটা কল্পনাও করা যায় না। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তা সংগঠিত হয়েছে। অথচ ওইদিন সেনাবাহিনীর ট্যাংক আবাহনী মাঠে ছিল। নির্দেশ পেলে সর্বোচ্চ ৩০মিনিটের মধ্যে পিলখানায় প্রবেশ করলে হতাহত কম হতো। এত বড় দুর্ঘটনা ঘটতো না। কিন্তু সেই নির্দেশ দেয়া হয়নি। কারণ এটা ছিলো ষড়যন্ত্রের অংশ।

তিনি বলেন, আমাদের প্রশ্ন বাংলাদেশের স্বার্থে কি সেদিন ৫৭জন সেনা সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল? নিশ্চয়ই বাংলাদেশের স্বার্থে নয়।তাহলে কার স্বার্থে। তখনকার সরকারের নতজানু নীতি ও বিদেশিদের খুশি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারলেও সেদিন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।

গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার আওয়ামী লীগের বাক্সবন্দি এমন দাবি করে মোশাররফ বলেন, দেশে এখন অলিখিত বাকশাল চলছে। এ কারণে সরকার তাদের কোনো সমালোচনা সহ্য করতে পারে না।

নতুন নির্বাচন কমিশন সরকারের পছন্দের এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে প্রস্তাব দিলেন। তার আলোকে রাষ্ট্রপতি সংলাপ করলেন। কিন্তু সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে তার কোনো ফলাফল আসেনি। কারণ যাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে তিনি সরকারি কর্মকর্তা থাকাবস্থায় সরকারের বিরুদ্ধে জনতার মঞ্চের সংগঠক ছিলেন। তখন তিনি কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ছিলেন। সেখানে তখনকার প্রধানমন্ত্রীর ছবি কার্যারলয় থেকে নামিয়ে ফেলেছিলেন। এখন তাকে করা হয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় এমন দাবি করে তিনি বলেন, আমরা বর্তমান কমিশনকে দেখতে চাই। সামনে কয়েকটি নির্বাচন আছে। তারা রকিবুদ্দিন কমিশনের মতো নির্বাচন করে কি না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন বিএনপি শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবেন। আবার বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলায় সাজা হলে বিএনপির হাল কারা ধরবেন। তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে নানা কৌশল করছে। এবং তারা আবারো ৫জানুয়ারির মতো নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু এমন নির্বাচন দেশের মানুষ মানবে না। তারপরও যদি সরকার একদলীয়ভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসার চিন্তা করে তাহলে দেশে অবধারিতভাবে গণঅভুত্থান হবে।

বেগম জিয়ার মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যেসব সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা কেউ বিএনপি চেয়ারপারসন দোষী এমন কথা বলেননি। এছাড়া মঈন-ফখরুদ্দিনের সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন মামলা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো সব প্রত্যাহার হয়ে গেছে। অথচ বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সেই মামলার বিচার চলছে। এটা স্বর্বেব মিথ্যা মামলা। তাই এই মামলা টিকবে না, টিকতে পারে না। আর তাকে কারাগারেও যেতে হবে না।

Check Also

ট্রাইব্যুনালে আ.লীগ নেতাদের বিচার দেখতে এসে যা বললেন সাঈদী পুত্র

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।