ক্রাইমবার্তা রিপোট:গাজীপুর সংবাদদাতা, গাজীপুরে পরকীয়ার জের ধরে গার্মেন্টস কর্মী স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায়ে একই সঙ্গে দ-প্রাপ্ত আসামিকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদ- দেয়া হয়েছে। বুধবার গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ এ.কে.এম এনামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। দন্ডপ্রাপ্তের নাম আব্দুস সাত্তার (৩৫)। সে ময়নসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার এনায়েতপুর গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গাজীপুর জজ আদালতের পিপি হারিছ উদ্দিন আহাম্মদ মামলার এজহার ও রায়ের বিবরণের বরাত দিয়ে জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার এনায়েতপুর এলাকার মো. ইব্রাহিমের ছেলে আ. সাত্তারের সঙ্গে একই এলাকার মৃত সাহেদ আলী মন্ডলের মেয়ে মোসা. হাসিনা বেগমের বিয়ে হয়। তারা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বাড়িয়ালী এলাকার শাহজাহান ড্রাইভারের বাড়ি ভাড়া থেকে স্থানীয় পোশাক কারখানায় চাকুরি করতো। তাদের আকাশ (১০) ও পুষ্প (১৪) নামের দুই সন্তান রয়েছে। গত বছরের ৫ মার্চ প্রতিদিনের মত কাজ শেষে বাড়ির উদ্দেশ্যে বারবৈকা এলাকার ডেন্ডি ফেক্স সুয়েটার কারখানা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় হাসিনা। পরদিন সকালে টেকনগরপাড়া (পলানটেক) এলাকার সিনকি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরীরর সামনে একটি পতিত জমিতে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় হাসিনার লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে। এব্যাপারে নিহতের ভাই মো. রাজ্জাক বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ নিহতের স্বামী আব্দুস সাত্তার ও মালিকের ছেলে মকবুল হোসেনকে (৩৬) গ্রেপ্তার করে। মকবুলের সঙ্গে হাসিনার পরকীয়ার কারণে হাসিনাকে হত্যা করেছে বলে নিহতের স্বামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। মামলার তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. শহীদুল্লাহ ওই বছরের ৩০ মার্চ আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। আটজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানী শেষে আদালত বুধবার আসামী আব্দুস সাত্তারকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। রায়ে একই সঙ্গে দ-প্রাপ্ত আসামিকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদ- দেন আদালত। রায় ঘোষণাকালে আসামী আদালতে উপস্থিত ছিল।
বাদী পক্ষে পিপি অ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দিন আহম্মদ এবং আসামীপক্ষে অ্যাডভোকেট একেএম মাসুম আল আজাদ মামলাটি পরিচালনা করেন।
###