ক্রাইমবার্তা রিপোট:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনার জন্য ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর দু’দিনের সফরে আজ ঢাকা এসেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ২টায় চীনের বেইজিং থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর জয়শঙ্করকে স্বাগত জানান শহীদুল হক।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের আমন্ত্রণে এ সফরে এলেন তিনি।
এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুই পররাষ্ট্র সচিব দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র পর্যালোচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর করা নিয়ে তারা আলোচনা করতে করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
জয়শঙ্কর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। ঢাকায় তিনি হোটেল মেরিডিয়ানে থাকবেন।
গত ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের কথাবার্তা হচ্ছিল। তার প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব দিল্লি গিয়েছিলেন। কিন্তু মূলত তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির ব্যাপারে নিশ্চয়তা না পাওয়ায় এ সফর পিছিয়ে দেয়া হয়। এরপর ভারতের উত্তর প্রদেশসহ পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন এবং বাজেট অধিবেশনের কারণে সফরটি আরো পিছিয়ে যায়। আগামী ১২ এপ্রিল বাজেট অধিবেশন শেষে সফরের দিনক্ষণ নির্ধারিত হতে পারে।
২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের ফিরতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিপীয় সফরে দিল্লি যাবেন। এই সফরে তিস্তা চুক্তি ও গঙ্গা ব্যারাজ বাংলাদেশের অগ্রাধিকারে থাকবে। তবে নির্দিষ্ট কোনো ইস্যুতে দুই দেশের সম্পর্ক আটকে থাকতে পারে নাÑ এমন মনোভাবে সফরটি নিয়ে দুই পক্ষ এগিয়ে যাচ্ছে।
জয়শঙ্করের ঢাকা সফরের কর্মসূচি ও আলোচ্যসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি শহীদুল হকের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে শ্রিংলা বলেন, এ সফরের প্রস্তুতি চলছে। বহু ক্ষেত্রেই আমরা ভালো অগ্রগতি করেছি। জ্বালানি ও কানেক্টিভিটি এর অন্যতম। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে মোট ছয়টি রেলওয়ে সংযোগের মধ্যে চারটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি দুটি সংযোগ নিয়ে কাজ চলছে। চলতি বছরের মধ্যেই সবকয়টি রেল সংযোগ চালু হয়ে যাবে। প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে নতুন নতুন ট্রেন ও বাস সার্ভিস শুরু হবে।
গঙ্গা ব্যারাজ নিয়ে যৌথ কারিগরি কার্যকরী গ্রুপ গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, এই গ্রুপ দুই দেশের ওপর ব্যারাজের প্রভাব পর্যালোচনা করবে। এ জন্য অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। এ ব্যাপারে অগ্রগতি হচ্ছে।
তিস্তার পানি বণ্টন ও গঙ্গা ব্যারাজ ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাথে দিল্লির অভ্যন্তরীণ বোঝাপড়া কতটা অগ্রসর হলো তা জানতে চাওয়া হলে শ্রিংলা বলেন, ভারত থেকে আসা সর্বশেষ প্রতিনিধিদলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিব ও পানি সম্পদ সচিব ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ এই সব ইস্যুতে আমরা সব পক্ষকে নিয়ে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে চাই।