ক্রাইমবার্তা রিপোট:বিএনপির অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এ বিষয়টি মাথায় রেখে সবাইকে সেইভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।’ গত রাতে সংসদ ভবনের সরকারি দলের সভাকে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন বলে দলটির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী দলীয় এমপিদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে তারা বলেন, ‘কেবল উন্নয়নের কথা বললেই ভোট হবে না। জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। সবাইকে গণমানুষের কাছে যেতে হবে। মতায় যেতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণ থেকে কখনো বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না। জনগণের কাছ থেকে অতীতে অনেক কিছু নিয়েছেন। এবার তাদের দিতে হবে।’
আগামী নির্বাচনে জনবিচ্ছিন্নদের মনোনয়ন না দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কে কী করছেন, তার রিপোর্ট আমার কাছে আছে। নিয়মিত এসব সব তথ্য হালনাগাদ করা হচ্ছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতেই আগামী নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হবে। এলাকায় যার অবস্থান ভালো না তাকে মনোনয়ন দেয়া হবে না।’ এ সময় তিনি এলাকায় কোন্দল মিটিয়ে সবাইকে মিলেমিশে কাজ করার নির্দেশ দেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াতকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বিষয়টি এখন প্রমাণিত। কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। তারা যে সন্ত্রাসী দল, তা আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আন্দোলনের নামে তারা মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। পুলিশ পুড়িয়ে মেরেছে। বিএনপি-জামায়াতের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। তাদের বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সচেতন করতে হবে।’
সূত্র জানায়, আগের নির্বাচনগুলোর তথ্য জোগাড় এবং বিশ্লেøষণ করে একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘অতীতের সব ভোটের তথ্য নির্বাচন কমিশন থেকে জোগাড় করতে হবে। ওই সব নির্বাচনে কারা প্রার্থী ছিল, কে, কত ভোট পেয়েছিল সব তথ্য বিশ্লেøষণ করে ভোটের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। কার কী দোষগুণ আছে, তা উপলব্ধি করতে হবে।’
পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কানাডার আদালতে রায়ের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি। দুর্নীতির অভিযোগের কারণে আমাদের পদ্মা সেতুর কাজ কিছুটা পিছিয়ে গেছে ঠিকই, হয়তো এখন ওই সেতুর ওপর দিয়ে আমরা চলাচল করতে পারতাম। কিন্তু ওই রায়ে আমাদের মাথা আন্তর্জাতিকভাবে অনেক উঁচু হয়েছে।’
বৈঠকে দলের সংসদ সদস্য নূর-ই আলম চৌধুরী লিটন সংসদীয় দলের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হওয়ায় সংসদ সদস্যরা তাকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন তোফায়েল আহমেদ, শামীম ওসমান, মনিরুল ইসলাম, জাহিদ মালেক স্বপন, ড. হাছান মাহমুদ, মুন্নুজান সুফিয়ান, শাজাহান খান প্রমুখ।