কলারোয়ায় হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্মে অতিষ্ট রোগীরা

ক্রাইমবার্তা রিপোট:ফিরোজ জোয়ার্দ্দার,স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ৫০শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে প্রয়োজনীয় ডাক্তার এবং লোকবল 25সংকটের মধ্য দিয়ে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রত্যেক দিন আউটডোরে প্রায় দুই শতাধিক রোগী আসেন চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য। নিয়ম অনুযায়ী টিকিট কেটে ডাক্তার দেখিয়ে বাইরে বের হলেই সেই সব রোগীরা পড়েন দালালদের খপ্পরে। বহি বিভাগসহ হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে মহিলা দালালদের সরব উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। সোমবার সকাল ১০টার দিকে এই প্রতিবেদক হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে মহিলা দালালদের বিভিন্ন কর্মকান্ড অবলোকন করেন। বহি বিভাগে টিকিটের জন্য লাইনে দাড়ানোর পর থেকে দালালেরা রোগীদের সাথে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে তাদের সমস্যা জেনে নিয়ে বাইরে অপেক্ষা করেন। ডাক্তারকে দেখিয়ে বাইরে বের হলেই তারা আবার রোগীর কাছে হাজির হয়ে জোরপূর্বক প্রেসক্রিপশন দেখতে থাকে। ডাক্তার প্রয়োজনীয় কোনো পরীক্ষা নিরীক্ষার কথা লিখলেই তখন দালালেরা বাইরের কোনো ডায়াগনষ্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য প্ররোচিত করতে থাকে। যদিও হাসপাতালের নিজস্ব প্যাথলজি বিভাগ ও এক্সরে ব্যবস্থা রয়েছে। হাসপাতাল রোড কেন্দ্রিক ১৫-২০ টির মত ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক আছে এদের প্রত্যেকটিতে ৩-৫ জন করে মহিলা দালাল রাখা আছে যাদেরকে মাসিক বেতন/ কমিশন দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে আনার জন্য। মোটা অংকের অর্থের লোভে ঐ সমস্ত দালালেরা প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আগত রোগীদের ভুল বুঝিয়ে হাসপাতালের পরীক্ষা ভালো নয় বলে সহজ, সরল রোগীদের বাইরে থেকে কম খরচে পরীক্ষার কথা বলে নিয়ে আসে আর এ কাজে তাদেরকে হাসপাতালের কতিপয় অসাধু ব্যক্তি সহযোগীতা করে থাকেন। ঐ দিন চিকিৎসা নিতে আসা রোকসানা, হালিমা, ইছহাক, তানিয়া, নাসরিন, হাসিনাসহ একাধিক রোগী অভিযোগ করে বলেন এর আগেও তারা আমাদেরকে বাইরে পরীক্ষার কথা বলে নাম মাত্র রিপোর্ট দিয়ে মোটা অংকের অর্থ নিয়েছে যে পরীক্ষাগুলো হাসপাতালে করালে অল্প খরচে করাতে পারতাম। ঐ সমস্ত দালালদের কারণে সরকার যেমন প্রতি বছর মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তেমনিভাবে অসহায়,দরিদ্র ও ভুক্তভোগী রোগীরা তাদের পরীক্ষার নামে অপচিকিৎসার খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে। সকাল সাড়ে দশটার দিকে হাসপাতালে ডাক্তার গোপাল চন্দ্র তার নিজ কক্ষে বসে রোগী দেখছিলেন। এই প্রতিবেদক দালালদের দৌরাত্মে রোগীদের অতিষ্ট হওয়ার বিষয়টি তার নজরে আনলে তিনি তার চেম্বার ছেড়ে দালালদেরকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন। তিনি রোগী দেখায় ব্যস্ত হয়ে পড়লে সেই সুযোগে দালালরা আবারও ফিরে আসে। এ বিষয়ে হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, আর এমও ডাক্তার শফিকুল ইসলাম ছুটিতে থাকায় হঠাৎ করে দালালদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। তিনি হাসপাতালে উপস্থিত থাকলে দালালদের উপস্থিতি একটু কম দেখা যায়। ভুক্তভোগীরা দালালদের দৌরাত্ম থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।