হোসিও কোনি হত্যা : ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

ক্রাইমবার্তা রিপোট:রংপুরের কাউনিয়ার চাঞ্চল্যকর জাপানি নাগরিক হোসিও কোনি (৬৬) হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার রংপুর স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকার এ রায় ঘোষণা করেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জেএমবির কিলিং লিডার মাসুদ রানা, লিটন, সাখাওয়াত, ইসহাক ও আনসারউল্লাহ আনসারী। এদের মধ্যে আনসারি পলাতক রয়েছে। খালাস দেয়া হয়েছে আবু সাঈদকে।

রায় ঘোষণার সময় আনসারি ছাড়া অপর ৫ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

সরকার পক্ষে ছিলেন রংপুর স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রথিশ চন্দ্র ভৌমিক এবং আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট আফতাব হোসেন ও আবুল হোসেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবুল হোসেন প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রায়ের কপি পাওয়ার পর উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের পক্ষে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজ বলেন, এটি একটি যুগান্তকারী রায়। আশা করব রাষ্ট্রপক্ষ যেন খালাস পাওয়া ব্যক্তির ব্যাপারে আপিল করে।

২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় রংপুর মহানগরীর উপকণ্ঠ কাউনিয়া উপজেলার কাচু আলুটারী এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হন হোসি। এ ঘটনায় কাউনিয়া থানার ওসি বাদি হয়ে তিন অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে মামলা করে। ময়নাতদন্ত শেষে হোসিও কোনির লাশ রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের হিমঘরে রাখা হয়। লাশ ঢাকা ও জাপানে নিয়ে যাওয়া নিয়ে নানা নাটকীয়তার পর কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে ১১ দিনের মাথায় ওই বছর ১২ অক্টোবর মধ্যরাতে মুন্সিপাড়া কবরস্থানে মুসলিম শরিয়াহ মোতাবেক দাফন করা হয়।

হোসিও কোনি ২০১৫ সালের ১৪ মে এক বছরের ভিসা নিয়ে রংপুর আসেন এবং তার জাপানি বন্ধু জাকারিয়া বালার রংপুর মহানগরীর মুন্সিপাড়ার বাড়ির দোতালায় পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকতেন। ২০১৫ সালের ২৭ রমজান তিনি বাড়ি লাগোয়া কাদেরিয়া মসজিদের ঈমাম সিদ্দিক হোসেনের কাছে মুসলমান হয়েছিলেন। মুসলমান হওয়ার পর তার নাম রাখা হয়েছিল গোলাম কিবরিয়া। রংপুরে এসে তিনি নগরীর পানির ট্যাংক এলাকার রজব আলীর ছেলে হুমায়ুন কবির হীরাকে নিয়ে কাউনিয়ার কাচু আলুটারিতে শাহ আলমের দুই একর জমি লিজ নিয়ে কোয়েল ঘাসের খামার তৈরি করে তা দেখাশুনা করতেন। কয়েক বছর আগেও তিনি রংপুর এসে ওই বাড়িতে ছয় মাস পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকতেন বলেও জানায় পুলিশ।

সূত্র জানায়, এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর সরকারি এবং প্রশাসনের লোকজন এর দায়ভার বিএনপি, জামায়াত ও শিবিরের ওপর চাপানোর চেষ্টা করে। গ্রেফতারও করা হয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন-নবী খান সোহেলের ছোট ভাই রংপুর মহানগর যুবদল নেতা ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাশেদ উন-নবী খান বিপ্লবসহ একাধিক যুবদলের নেতাকর্মীকে। পরে জেএমবির কিলিং মিশনের লিডার মাসুদ রানা গ্রেফতার হওয়ার পর তার স্বীকারোক্তি পেয়ে তারা তদন্তের মোড় ঘুরে যায়। একে একে আসতে থাকে এই হত্যাকাণ্ডসহ এই অঞ্চলের বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে জেএমবির মিশনের চাঞ্ছল্যকর তথ্য। পুলিশ অভিযুক্ত পাঁচ খুনিকে গ্রেফতারও করতে সক্ষম হয়। বাকি পলাতক রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আনছারুল্লাহকেও পুলিশ খুঁজছে।

Check Also

আশাশুনিতে টঙ্গী ইজতেমায় হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।ঢাকার টঙ্গীত ইজতেমা-মাঠে নিরীহ মুসল্লিদের উপর উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সাদ পন্থীদের বর্বরোচিত হামলা ও পরিকল্পিত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।