ক্রাইমবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক :দ্বিতীয় তারকার পতন। এখন সময়ের অপেক্ষা! মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে এফবিআইয়ের তদন্তের মুখে পদত্যাগ করতে হবে অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনসকে। দাবি উঠেছে ডেমোক্র্যাট শিবির থেকে। কিন্তু এফবিআইয়ের মাথায় বসে রয়েছেন জেফ সেশনস নিজেই। ফলে তিনি ওই পদে বহাল থাকলে তদন্ত বাধাগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা ডেমোক্র্যাটদের। স্বাভাবিকভাবেই এফবিআইয়ের তদন্ত থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হলো সেশনসকে। আর এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেন, ডেমোক্র্যাটরা যে দাবি তুলেছে, তা ডাইনি খোঁজার মত ব্যাপার।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, গত বছর আমেরিকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে দু’বার বৈঠক করেছিলেন সেশনস। অথচ, মার্কিন কংগ্রেসে মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার শুনানিতে সেশনস যা বলেছিলেন, ওয়াশিংটন পোস্টের এই খবর ছিল ঠিক তার বিপরীত। শুনানিতে সেশনস রাশিয়ার কোনও কর্তার সঙ্গে ট্রাম্পের নির্বাচন নিয়ে কথা বলার বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছে, গত বছর সিনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সদস্য হিসাবে সেশনস রুশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। শুনানিতে সেশনস বলেছিলেন, নির্বাচনী প্রচার বা এই সংক্রান্ত কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে রাশিয়ার কোনও কর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি তিনি। ওয়াশিংটন পোস্ট-এ সেশনসের রুশ যোগাযোগের খবর প্রকাশ পাওয়ার পর বেশ বেকায়দায় পড়ে যান তিনি। রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠজনদের যোগাযোগ নিয়ে তদন্ত করছে এফবিআই। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার দলের একজন পরিচিত মুখ ছিলেন সেশনস। আলাবামা অঙ্গরাজ্যের প্রাক্তন এই সিনেটর গত ৮ ফেব্রুয়ারি সিনেটের ভোটাভুটিতে কোনও মতে উতরে অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন। মানবাধিকার ইস্যুতে তার অতীতের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তার বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে রুশ কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার জেরেই ট্রাম্প গত মাসের মাঝামাঝি তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনকে বরখাস্ত করতে বাধ্য হন। উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন বরখাস্ত হওয়ার পর একই ধরনের কাজে অ্যাটর্নি জেনারেল সেশনসের জড়িত থাকার খবরে রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের যোগাযোগ এবং নির্বাচনে ‘তাঁর পক্ষে’ রুশ হ্যাকিংয়ের অভিযোগের বিষয়টি আবার সামনে এসে গিয়েছে।
জেফ সেশনসের রুশ যোগাযোগের খবরের প্রতিক্রিয়ায় ডেমোক্র্যাট নেতা ন্যান্সি পেলোসি বলেন, শপথ নিয়েও মিথ্যা বলায় সেশনসের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। অন্য ডেমোক্র্যাট নেতারা বলছেন, রাশিয়ার কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের কারণেই সেশনসের বিরুদ্ধে তদন্তে পিছু হটে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।