প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত ইবির ‘এফ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বাতিল ॥ ইউনিট সমন্বয়কারীসহ বহিষ্কার ৪

ক্রাইমবার্তা রিপোট:ইবি সংবাদদাতা-ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চলতি বছরের ভর্তি পরীক্ষায় ‘এফ’ ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ইউনিট সমন্বয়কারীসহ ৪জনকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও ওই ইউনিটের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।21
জানা যায়, ২০১৬-১৭ শিক্ষা বর্ষের অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদভুক্ত ‘এফ’ ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি আমলে নিয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রশাসন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে কমিটি গত শনিবার ভিসির নিকট তদন্ত প্রতিবেদ দাখিল করে।
তদন্ত কমিটির ভাষ্যমতে, ভর্তি পরীক্ষায় ‘এফ’ ইউনিটের সমন্বয়কারী ও গণিত বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক মোঃ নূরুল ইসলাম একই বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থী মনোজিত মন্ডলকে পরীক্ষার আগের দিন উত্তরপত্রসহ প্রশ্ন সরবরাহ করে। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তারা প্রতি ভর্তিচ্ছুদের থেকে দেড় লক্ষ থেকে আড়াই লক্ষ টাকার বিনিময়ে উত্তরপত্রসহ প্রশ্ন প্রদান করে। ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তীসহ অনেক ভর্তিচ্ছু মোটা অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন ক্রয় করে। এঘটনার সাথে জড়িত ছিল বিশ্ববিদ্যালয় অর্থ ও হিসাব বিভাগের সিনিয়র অডিটর সাইফুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ফটোকপি অপারেটর মোঃ আলাউদ্দীন এবং ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী পল্লী চিকিৎসক মিজানুর রহমান লাল্টু।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩৩তম সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িতদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই ইউনিটের সমন্বয়কারী সহকারী অধ্যাপক মোঃ নূরুল ইসলামকে সাময়িক বরখস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও অর্থ ও হিসাব বিভাগের সিনিয়র অডিটর সাইফুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ফটোকপি অপারেটর মোঃ আলাউদ্দীনকেও সাময়িক বরখস্ত করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত গণিত বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থী মনোজিত মন্ডলকে তার অনার্সের সার্টিফিকেট বাতিলসহ সাময়িক ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে। তাদের কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না মর্মে কারণ দর্শাতে বলা হবে। এছাড়াও ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী পল্লী চিকিৎসক মিজানুর রহমান লাল্টুকে ফৌজদারী আইনের আওতায় বিচার করা হবে। এবং ওই ইউনিটের দায়িত্বে থাকা অন্য সদস্যদের দায়িত্ব অবহেলার জন্য আগামি দুই বছর ভর্তি কার্যক্রমের সাথে রাখা হবে না মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে।
এছাড়াও সিন্ডিকেটে অর্থ কেলেঙ্কারীর দায়ে সাময়িক বহিষ্কৃত উপ প্রধান প্রকৌশলী তৌমুর রেজা তুনিহকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় সিন্ডিকেট সভায় ওই ইউনিটের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। আজ মঙ্গলাবার কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার মিটিংয়ে পুনঃপরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে।

ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন,‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে দূর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখতে অসাধু চত্রের বিরুদ্ধে শক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি। যাতে দেশে-বিদেশে এধরনের সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী হিসেবে ভূমিকা রাখে।

Check Also

ঢাকা প্রসঙ্গে বদলাতে পারে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি

পাঁচ দশকের বিরতির পর গত মাসে বাংলাদেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রামে একটি পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজ ডক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।