ক্রাইমবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: মহাশূন্য পাড়ি জমানো এই গ্রহের প্রথম নারী ভ্যালেন্তিনা তেরেসকোভাকে তার ৮০তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছে রাশিয়া। আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে প্রতিবছরই ৬ মার্চ তেরেসকোভার জন্মদিনকে বিশেষ উদ্দীপণার সঙ্গে পালন করে রাশিয়ানরা। ১৯৬৩ সালে সালে এই দু:সাহসী নারী ভস্টক-৬ নামে একটি নভোযানে চড়ে মহাশূন্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
মহাশূন্য ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে চ্যানেল ওয়ান টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, ‘নভোযানটি যখন কক্ষপথে পৌঁছলো তখন আমার মনে হচ্ছিলো- আর বুঝি পৃথিবীতে ফেরা হবেনা। কারণ নভোযানটি যেন বারবারই কক্ষচ্যুত হতে চাইছিলো।’ এ সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ‘সমস্যার কথা জানিয়ে আমি কেন্দ্রীয় মিশন পরিচালনা কক্ষে বার্তা পাঠাই। তারা আমাকে প্যারামিটার সামলাবার কয়েকটি নির্দেশনা দেন এবং ধীরে ধীরে সমস্যাও দূর হয়ে যায়।’
১৯৬১ সালের ১২ এপ্রিল প্রথম মানুষ হিসেবে ইউরি গ্যাগারিন মহাশূন্যে ভ্রমণ করার পরই রাশিয়ান নভো সংস্থা একজন নারীকে মহাশূন্যে পাঠানোর জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছিলো। প্রায় ৪০০ আগ্রহী নারীর মধ্য থেকে ভ্যালেন্তিনা তেরেসকোভাই সবচেয়ে যোগ্য বিবেচিত হয়েছিলেন। মহাশূন্যে একের পর এক অভিযান পরিচালনার মধ্য দিয়ে সেসময়ে রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে একটি অলিখিত প্রতিযোগীতা চলছিলো।
মহাশূন্যে ভ্রমণের আগে তেরেসকোভা ছিলেন একজন পোশাক কারখানার কর্মী। তবে, আকাশ থেকে প্যারাস্যুট জাম্প ছিলো তার অন্যতম শখ।
তিনদিনের মহাশূন্য ভ্রমণের মধ্য দিয়ে রাতারাতি সারা পৃথিবীতেই তারকা বনে যান তেরেসকোভা। পৃথিবীতে ফিরে আসার পর তাকে নায়োকোচিত সংবর্ধণা দেওয়া হয়।
সোমবার তেরেসকোভার ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনগুলোতে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ক্রেমলিনে তাকে স্বাগত জানান। তেরেসকোভার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘তিনি আমাদের পিতৃভূমির সেবায় নিয়োজিতদের পথপ্রদর্শক।’ এসময় তিনি তেরেসকোভাকে একটি চিত্রকর্ম উপহার দেন। ছবিটিতে ভলগা নদীর তীরে কতগুলো সিগালকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় এবং ১৯৬৩ সালে তেরেসকোভার অভিযানকালীন কল সাইন ‘সাইকা’ (সিগাল) নামাঙ্কিত।
জন্মদিন উদযাপন করতে গিয়ে তেরেসকোভা বলেন, ‘খুব কঠিন কাজ হলেও জানতাম দেশকে এগিয়ে নিতে এবং গৌরবান্বিত করার জন্য আমরা লড়ছি।’ তিনি বলেন, ‘মহাশূন্যে প্রথম হওয়ার চেয়ে আনন্দ আর কিছুতে নেই। স্বপ্নে আমার মহাশূন্য ভ্রমণকে এখনও মাঝেমাঝে উপভোগ করি।’ এবিসি নিউজ