এনপিপি থেকে এবার নিলু বহিষ্কার

ক্রাইমবার্তা রিপোট:ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) থেকে এবার শেখ শওকত হোসেন নিলুকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের দুই প্রেসিডিয়াম সদস্য তাকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে নিলুর নেতৃত্বাধীন এনপিপি থেকে পদত্যাগ করেন দলের মহাসচিব আব্দুল হাইমুল। তারপর একযোগে পদত্যাগ করেন ৪৪ জন নেতা। ফলে এনপিপি এখন ত্রি-বিভক্ত।

এদিকে আজ মঙ্গলবার নিলুর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর চিঠির মাধ্যমে আবেদন জানানো হয়েছে।

নিলুকে এনপিপি থেকে বহিষ্কারের ব্যাপারে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে- দলের চেয়ারম্যান হয়েও নিলু সংগঠনের ভেতরে বিশৃক্সক্ষলা সৃষ্টি করে আসছেন। গত ৫ মার্চ আপনাকে লিখিতভাবে সংশোধনের কথা বললেও আপনি কোনো তোয়াক্কা করেননি। উপরন্তু আপনি দলের দলের গঠনতন্ত্রের ৪৬(২) ধারামতে করে ৩ জন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও একজন ভাইস চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্তু তার আগে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সাথে আলোচনা করার প্রয়োজন ছিল। আপনি তা না করায় আপনাকে আমরা প্রেসিডিয়াম সদস্যগণ দল থেকে বহিষ্কারে বাধ্য হলাম।
পরবর্তী কাউন্সিল অধিবেশন পর্যন্ত দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ফিরোজ মাহমুদ মঙ্গল এবং মহাসচিব পদে প্রেসিডিয়াম সদস্য মো: মোশাররফ হোসেনকে ঘোষণা করা হলো। চিঠিতে এই দুই নেতা স্বাক্ষর করেছেন।
নিলুর বিরুদ্ধে ইসিতে চিঠি: এদিকে শেখ শওকত হোসেন নিলুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনার বরাববর চিঠিতে উক্ত দুই নেতা বলেছেন, এনপিপি একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। এর চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু পার্টির গঠনতন্ত্র এমনকি দেশে প্রচলিত সাধারণ আইন বা রীতিনীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে নিজের খেয়ালখুশি মতো যথেচ্চারে লিপ্ত। তার অগঠনতান্ত্রিক এবং অনৈতিক কার্যকলাপকে চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যে দলের ৪৪ জন কেন্দ্রীয় নেতা এবং মহাসচিব পদত্যাগ করেছেন। আমরা তাকে সভা আহ্বান করার মাধ্যমে এর বিহিত করার জন্য পত্র দিলেও কোনো তোয়াক্কা করেননি। এমতাবস্থায় তার বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে কৃতার্থ করবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মহাসচিব আব্দুল হাই মন্ডল এনপিপি থেকে পদত্যাগ করেন। তারপর ২৭ ফেব্রুয়ারি দল থেকে কেন্দ্রীয় ৪৪ জন নেতা এনপিপি থেকে গণপদত্যাগ করেন। তারও আগে, বিএনপি জোটকে না জানিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইফতার মাহফিলে নিলুর অংশ নেয়া এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে মতদ্বন্দ্বে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে ওই বছর দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় এনপিপি। প্রেসিডিয়ামের সভা ডেকে চেয়ারম্যান নিলু তখন প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল হাই মন্ডলকে তার অংশের মহাসচিব করেন এবং বিএনপি জোট থেকে বের হয়ে ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-এনডিএফ নামে নতুন রাজনৈতিক জোট গঠন করেন। নিলু বর্তমানে এই জোটের আহ্বায়ক।
অন্যদিকে, দলটির প্রেসিডিয়ামের আরেক সভা থেকে তৎকালীন মহাসচিব ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে চেয়ারম্যান এবং মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাকে মহাসচিব করা হয় এবং এনপিপির এই অংশটি বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিশ দলীয় জোটে থেকে যায়।

Check Also

প্রত্যেকটা অফিসের কেরানি পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর : আসিফ মাহমুদ

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।