ক্রাইমবার্তা রিপোট:গাজীপুর সংবাদদাতাঃ হরকাতুল জিহাদ নেতা ফাঁসির দন্ড প্রাপ্ত আসামী মুফতি হান্নানকে ছিনিয়ে নিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে প্রিজনভ্যান ও পুলিশের গাড়িকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত মোস্তফা কামালের (২২) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ তাকে গাজীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এ হাজির করলে আদালতের বিচারক ওই আদেশ দেন। এদিকে বোমা হামলার ওই ঘটনায় পুলিশ টঙ্গী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে।
গাজীপুরের কোর্ট ইন্সপেক্টর মো: রবিউল ইসলাম জানান, হরকাতুল জিহাদ নেতা ফাঁসির দন্ড প্রাপ্ত আসামী মুফতি হান্নান ও তার সহযোগিদের ছিনিয়ে নিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে প্রিজনভ্যান ও পুলিশের গাড়িকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপের ঘটনার মামলায় টঙ্গী মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে মোস্তফা কামালকে বিকেলে গাজীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-৪ এ হাজির করেন। শুনানি শেষে ওই আদালতের বিচারক মাহবুবা আক্তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের আদেশ দেন। এর আগে মোস্তফা কামালকে কড়া পুলিশ প্রহড়ায় ওই আদালতে হাজির করা হয়।
টঙ্গী মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার জানান, ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী হত্যা চেষ্টার মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামী হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান ও তার সহযোগীসহ ১৯ আসামীকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে সোমবার সকালে ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়। আদালতে হাজিরা শেষে বিকেলে তাদেরকে পুনঃরায় পুলিশের প্রহরায় প্রিজনভ্যানে করে কাশিমপুরের ওই কারাগারে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছিল। পথে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গীর কলেজ গেইট এলাকার সফি উদ্দিন সরকার একাডেমির সামনে পৌছলে মুফতি হান্নান ও তার সহযোগিদের ছিনিয়ে নিতে মোস্তফা কামাল ও তার সঙ্গীরা আসামীবাহি প্রিজনভ্যান এবং পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে পরপর কয়েকটি হাত বোমা নিক্ষেপ করে। নিক্ষিপ্ত বোমাগুলোর মধ্যে দু’টি বোমা সড়কে পড়ে বিষ্ফোরিত হয়। অপর একটি বোমা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পুলিশের পিকআপের আরোহী এক কন্সটেবলের গায়ে লেগে তার পায়ের পাশে গাড়িতে পড়ে। তবে সেটি অল্পের জন্য বিষ্ফোরিত না হওয়ায় হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। এসময় পুলিশ সদস্যরা ধাওয়া করে বোমা নিক্ষেপকারী এক যুবক মোস্তফা কামালকে দু’টি ব্যাগসহ (একটি ট্রাভেল ব্যাগ ও অপরটি স্কুল ব্যাগ) আটক করে। তবে তার সঙ্গী অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ব্যাগ দু’টিতে তল্লাশি করে দুই রাউন্ড গুলিভর্তি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৩ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, দুইটি পেট্রোলবোমা, পাঁচটি হাত বোমা, ২টি চাপাতি, বোমা তৈরির লোহার বল, মোবাইল ফোন, ব্যাটারি ও নগদ ৭ হাজার ৯১৫ টাকাসহ ইত্যাদি উদ্ধার করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশের প্রহরায় আসামীদের নিয়ে ওই প্রিজনভ্যানটি অক্ষত অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রিয় কারাগারে পৌছে। আটক মোস্তফা কামাল ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানার পাগুলি (বন্দেরবাড়ি) গ্রামের মোঃ মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। সে নরসিংদীর মাধবদীর শেখেরচর জামিয়া ইমদাদিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত।
এ ঘটনায় সোমবার দিবাগত রাতে টঙ্গী মডেল থানার এসআই অজয় কুমার চক্রবর্তী বাদী হয়ে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে টঙ্গী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ঘটনাস্থল থেকে আটক মোস্তফা কামালসহ আরো অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।