হুমাম কাদেরের জামিন

ক্রাইমবার্তা রিপোট:তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন বিএনপি নেতা হুমাম কাদের চৌধুরী। উচ্চ আদালতের নির্দেশে হুমাম কাদের চৌধুরী বুধবার ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির হয়ে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। হাকিম মাহমুদুল হাসান শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এ মামলায় গত বছরের ২২ নভেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে ও স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরীকে আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ছয় সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন। আত্মসমর্পণ করলে তাদের জামিন বিবেচনা করতে বিচারিক আদালতকে বলা হয়।

দীর্ঘ সাত মাস পর বৃহস্পতিবার বাসায় ফেরেন বিএনপি নেতা হুমাম কাদের চৌধুরী। গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর আদালত পাড়া থেকে তুলে নেয়া হয় মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুমাম কাদের চৌধুরীকে। একটি মামলায় তিনি এবং তার মা আদালতে গিয়েছিলেন হাজিরা দিতে। সেখানে গাড়ি থেকে নামার পরেই সাদা পোশাকধারীরা তাকে তুলে নিয়ে যায়। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নেয়া হয়েছিলো বলে ওই সময় অভিযোগ করেন হুমামের আইনজীবীরা। ওই সময় থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলেও পুলিশ সেটি গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। সে থেকেই নিখোঁজ ছিলেন হুমাম কাদের চৌধুরী।
উল্লেখ্য-তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ও ছেলেকে খালাস দিয়ে আইনজীবীসহ পাঁচজনকে কারাদ- দেন আদালত। ওই মামলায় সাজার আদেশ পাওয়া এক আসামির আপিলের গ্রহণযোগ্যতার শুনানিতে বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের বেঞ্চ ২২ নভেম্বর স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। রুলে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ও ছেলেকে খালাসের রায় বাতিল করে কেন তাদের যথাযথ সাজা দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে আদালত আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলেন। আদেশের অনুলিপি হাতে পাওয়ার ছয় সপ্তাহের মধ্যে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। অতঃপর এ মামলায় ফারহাদ কাদের চৌধুরী নি¤œ আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন লাভ করেন। আজ এ মামলায় হুমাম কাদের চৌধুরী আত্মসমর্পন করে জামিন লাভ করেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর যুদ্ধাপরাধের রায় ফাঁসের ঘটনায় তার স্ত্রী ও ছেলেকে খালাস দিয়ে আইনজীবীসহ পাঁচজনকে কারাদণ্ড দেন আদালত। এর মধ্যে ট্রাইব্যুনালে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী ফখরুল ইসলামকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, সেই সঙ্গে এক কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। আর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ম্যানেজার মাহবুবুল আহসান, ফখরুলের সহকারী মেহেদী হাসান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী নয়ন আলী ও ফারুক হোসেনকে দেয়া হয় সাত বছরের কারাদণ্ড। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। জামিনে থাকা ফারহাত কাদের চৌধুরী রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত হন। আর তার ছেলে হুমাম কাদের চৌধুরীকে পলাতক দেখিয়েই আদালত রায় ঘোষণা করেন, যদিও পরিবারের দাবি, তাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গত আগস্টের শুরুতে তুলে নিয়ে যায়। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের এ মামলায় দুপক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষ হয় গত বছরের ৪ আগস্ট। সেদিন শুনানিতে হাজির না থাকায় সালাউদ্দিন কাদেরের ছেলে হুমাম কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ হয়।

Check Also

প্রত্যেকটা অফিসের কেরানি পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর : আসিফ মাহমুদ

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।