ক্রাইমবার্তা রিপোট:‘২০০১ সালের নির্বাচনের পূর্বে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে বিএনপি হতবাক হয়েছে জানিয়ে এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আমাদের হতবাক করেছে। তিনি এতবড় দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি করতে পারেন তা আমাদের চিন্তারও বাইরে।
আজ সোমবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভা শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব বলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শনিবার বলেছেন, ‘২০০১ সালের নির্বাচনের পূর্বে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল’। তাহলে প্রধানমন্ত্রী কিভাবে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কার কাছে মুচলেকা দিয়েছিলেন?
তিনি বলেন, জনগণের ধারনা আছে যে, ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশে আসলেন। তিনি সব জায়গায় দৌড়ালেন। এরশাদ সাহেবের কাছে গেলেন। তাকে নির্বাচনের জন্য রাজি করালেন। তাহলে কি মানুষ এটাই ভাববে যে ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভারতের ‘র’ এর ভুমিকা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা কখনোই দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো কাজ করিনি। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে নাকি বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল। প্রধানমন্ত্রীর মতো দায়িত্বশীল ব্যক্তির এমন মন্তব্যে এ কথা তিনি পরিস্কার করে দিয়েছেন যে, এদেশে তাহলে বিদেশীরা অবস্থান করছে। তারা বিভিন্ন ভাবে কাজ করছে এবং সরকার পরিবর্তনশীলতার সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে এ ধরনের উক্তি দেশ ও জাতির জন্যে কতটা মঙ্গলজনক হবে তা সহজেই অনুমেয়।
আসলে প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সার্থে অবলীলায় মিথ্যাচার করেন। ফলে জাতি আরো বিভক্ত হয়। অথচ দেশের সঙ্কট মোকাবিলায় ও অথনৈতিক উন্নয়নে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা দরকার। তার উচিৎ ভেবে চিন্তে মন্তব্য করা। দেখেন আজ পর্যন্ত যত বক্তব্য তিনি দিয়েছেন, তার মতো কিন্তু দায়িত্বজ্ঞানহীণ বক্তব্য আমরা দেইনি।
তিনি বলেন, লোকজন বলে খোদ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নাকি লোকজন বসে থাকে, বাইরের লোকজন। কারা বসে থাকে আমরা জানিনা। এর ব্যাখ্যা তো তারো দেয়া উচিৎ। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর উচিত হবে দেশের মানুষের কথা, আন্তর্জাতিক স্বার্থের কথা এবং যেটা বলা উচিৎ সেই কথা বলা।
প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ভারতের সাথে বিভিন্ন নদীর পানি চুক্তি ছাড়া দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বিরোধী চুক্তি হলে জনগণ মেনে নিবে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামী মাসের ৮ তারিখে ভারতে যাবেন। আমরা আশা করছি তিনি তিস্তা পানি বন্টন চুক্তি করবেন। তবে দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব বিরোধী কোনো চুক্তি করলে দেশের জনগণ মানবে না।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি দেশের জন্য সব করেছে কিন্তু কখনো দেশের স্বার্থ বিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এরআগে ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি নিয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে দলের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এনি, রুহুল কদ্দুস তালুকদার দুলু, বিলকিস জাহান শিরিন, শামা ওবায়েদ, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ সহ বিএনপি অঙ্গসংগঠনের সিনিয়র নেতাকর্মীবৃন্দ।
Check Also
ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়
দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …