ক্রাইমবার্তা রিপোট:বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রতিরক্ষা চুক্তি একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এর সাথে দেশের নিরাপত্তা জড়িত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৭ এপ্রিল ভারত সফরে যাবেন। গণমাধ্যমের সূত্রমতে এই সফরে প্রায় দুই ডজন চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর হবে। যেহেতু ভারত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র তাই আমরা আগেই বলেছি-ভারতের সাথে বাংলাদেশের সামরিক চুক্তিতে হলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে কী না তা নিয়ে দেশের মানুষ দু:শ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় রাষ্ট্রবিরোধী চুক্তি হলে জনগণ মানবেনা।
আজ বুধবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন দক্ষিণ-এশিয়াভিত্তিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বলছে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাক্ষরিত কয়েকটি চুক্তি এবং তাদের কাছ থেকে সাবমেরিন কেনার পর ভূরাজনৈতিক নিরাপত্তার প্রশ্নে উদ্বিগ্ন ভারত। সেই উদ্বেগ দূর করতেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে প্রতিরক্ষা চুক্তির তোড়জোড় করছে ভারত। বাংলাদেশ পৃথিবীর কোনো দেশের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করেনি।
তিনি বলেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের সামরিক চুক্তি হলে তা হবে আত্মঘাতি ও জাতীয় স্বাধীনতা বিরোধী। কারণ বাংলাদেশের নিরাপত্তা যদি ভারতের উপর নির্ভরশীল হয় এবং ভারতের ইচ্ছা অনুযায়ী যদি প্রতিরক্ষা নীতি গ্রহণ করতে হয় তাহলে এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বলে কিছু থাকবে না। এই ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী প্রতিরক্ষা চুক্তি হলে এদেশের জনগণ তা কখনোই মেনে নেবে না, বরং এই ধরণের চুক্তি প্রতিরোধে সর্বশক্তি দিয়ে এগিয়ে আসবে।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হঠাৎ ভারত বিরোধী বক্তব্য দিয়ে আলোড়ণ সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেছেন-২০০১ সালে ভারতের ‘র’ এবং যুক্তরাষ্ট্র মিলে বিএনপি-কে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। শেখ হাসিনার হঠাৎই এধরণের উক্তি রহস্যজনক। এটি একটি পাতানো খেলারই অংশ। হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রীর ‘র’ এর বিরুদ্ধে বিরোধীতা যে তামাশারই অংশ তা নিয়ে জনগণের মধ্যে কোন সংশয় নেই।
তিনি বলেন, ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। বন্ধুত্ব হয় সমানে সমানে। কিন্তু কোন বন্ধু যদি বন্ধুত্বের নামে আধিপত্য বিস্তার করতে চায় তবে তাহলে সেটিকে বন্ধুত্ব বলা যায়না, সেটি হয় প্রভুত্ব। ভারত বাংলাদেশের সাথে বহু অমিমাংসিত বিষয় এখনও সমাধান করেনি। এখনও দুই দেশের দীর্ঘ সীমান্ত ভারতের বিএসএফ দ্বারা প্রতিনিয়ত আক্রান্ত ও বাংলাদেশীদের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে। আমাদের অর্থনীতিকে ভারতের ওপর নির্ভরশীল রাখার জন্য তারা বেপরোয়া। বাংলাদেশ সরকারের ভ্রান্তনীতির কারণেই দেশের সংস্কৃতি এখন ভারতীয় আগ্রাসনের শিকার।
বিএনপি নেতা বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেষে ভারতীয় এলাকাগুলোতে পরিকল্পিতভাবে ফেনসিডিলসহ মাদকের কারখানা খুলে তা বাংলাদেশে রফতানী করে দেশের যুবসমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। আর বাংলাদেশকে মরুময় করার জন্য স্বাধীনতার পর থেকেই ভারতের পানি আগ্রাসন সর্বজনবিদিত।