ক্রাইমবার্তা রিপোট: ১৬ মার্চ ২০১৭,বৃহস্পতিবার,নাজমুল আলম মুন্না,সাতক্ষীরা। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার ডিজিটাল হলরুমে ১৫ মার্চ ২০১৭ বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নূর হোসেন সজলের সভাপতিত্বে এই সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলার ভাইস-চেয়ারম্যান কোহিনূর ইসলাম, সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) শেখ সেকান্দার আলী, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহিদুর রহমান ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান।
বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে সাতক্ষীরায় সেমিনার অনুষ্ঠিত
সেমিনারে সভাপ্রধান উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নূর হোসেন (সজল) বলেন আমি ১০ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় যোগদানের পর হতে আমার নিজস্ব ত্বত্তাবধানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৯ টি মামলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি যার মধ্যে ২১ জন আসামী আটক করা হয়। ১৯৯০ এর ১৯ (১) টেবিলের ৭ এর (ক) ও ২৬ ধারায় এবং দন্ডবিধির ৫০৯ (ইভটিজিং) ধারায় অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মোট ২১জন আসামির মধ্যে ১৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করি এবং ৭ জনকে অর্থদণ্ড প্রদান করে মোট ২৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করেছি। তারপর তিনি বলেন সর্বপ্রথম আমাদের সকলকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সম্পর্কে অবহিত হতে হবে পাশাপাশি আইনটিতে বর্ণিত ভোক্তা অধিকার ও দায়িত্ব এবং ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্য ও অপরাধ এবং দন্ড সম্পর্কে জানতে হবে তা’নাহলে আমরা কেউই এর সুফল ভোগ করতে পারবো না বরং সারাজীবন এর নেতিবাচক ফলাফল বয়ে বেড়াতে হবে। জাতীয় ভোক্তা -অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত লিফলেট এর ৩৭ ধারায় বর্ণিত আছে যে প্রত্যেক পণ্যের মোড়ক ইত্যাদিতে অবশ্যই পণ্যের ওজন, পরিমাণ, উপাদান, ব্যবহার-বিধি, সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্য, উৎপাদনের এবং এর মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ এবং প্যাকেটজাত করনের তারিখ স্পষ্ট ভাবে লিপিবদ্ধ বাধ্যতামূলক করতে হবে। সেটি লঙ্ঘন করলে অনুর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ড কার্যকর হবে। ৩৮ ধারায় মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করলে অনুর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ৩৯ ধারায় বলা হয়েছে যদি কোন প্রতিষ্ঠান সেবা মূল্যের তালিকা সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করে তাহলে ১ বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ৪০ ধারায় বর্ণিত আছে ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য, ঔষধ বা সেবা বিক্রেতাকে অনুর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। ৪১ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে ভেজাল পণ্য বা ঔষধ বিক্রয় করলে অনুর্ধ্ব ৩ বছেরর কারাদণ্ড বা ২ লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ৪২ ধারায় বলা হয়েছে খাদ্য পণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রন করলে অনুর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ২ লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ৪৩ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে যে যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ করে তা হলে তাদের বিরুদ্ধে অনুর্ধ্ব ২ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১ লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। ৪৪ ধারায় বলা হয়েছে কোন প্রতিষ্ঠান যদি মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারনকে প্রতারিত করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ১ বছরের কারাদন্ড বা অনধিক ২ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। ৪৫ ধারাতে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক কোন পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা হলে অনুর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। ৪৬ ধারায় বলা হয়েছে ওজনে কারচুপি করলে অনুর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ৪৭ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রে কারচুপি করলে ১ বছরের জেল বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। পণ্যের নকল প্রস্তুত বা উৎপাদন করলে অনুর্ধ্ব ৩ বছরের জেল বা ২ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ৫১ ধারায় বলা হয়েছে মেয়াদ উত্তীর্ন পণ্য বা ঔষধ বিক্রয় করিলে অনুর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড হবে। সেবা গ্রহিতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্নকারী কার্য সম্পাদন করিলে অনুর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ২ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দন্ড হবে৷ ৫৩ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে অবহেলা, ইত্যাদি দ্বারা সেবা গ্রহিতার অর্থ, স্বাস্থ্য, জীবনহানি ইত্যাদি ঘটনার অপরাধে অনুর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদন্ড বা ২ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড। ৫৪ ধারায় মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করিলে অনুর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। ৫৫ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে কোন দন্ড প্রাপ্ত ব্যক্তি যদি অপরাধ পুনঃ সংঘটন করে থাকে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ দন্ডের দ্বিগুণ দন্ড কার্যকর করা হবে।