জুবাইদা গুলশান আরা আর নেই

ক্রাইমবার্তা রিপোট:খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক জুবাইদা গুলশান আরা আর নেই। রোববার বেলা আড়াইটায় সিদ্ধেশ্বরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ইন্তিকাল করেছেন। ইন্না নিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন

জুবাইদা গুলশান আরা তার সহিত্য কর্মের অবদানস্বরূপ একুশেদক লাভ করেন। উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, শিশুতোষ ছড়া মিলিয়ে তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৫০-এর উপরে। তার বেশ কিছু গল্প উপন্যাস টিভি নাটকে রূপ দেয়া হয়েছে । ষাটের দশক থেকে লেখালেখিতে যুক্ত জুবাইদা গুলশান আরা কবি জসীম উদ্দীন পদকসহ আরো বিভিন্ন পদকে ভূষিত হন। পেশাগত জীবনে তিনি সরকারি কলেজ থেকে বাংলার অধ্যাপক হিসেবে অবসর নেয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯৪২ সালে খুলনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মো : ইউনুস, মায়ের নাম আঞ্জুমান আরা।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগ থেকে এমএ পাস করেন। তার স্বামী অধ্যাপক মাহমুদ-উল-আমীন (মরহুম) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিদ্যা বিভাগের খ্যাতিমান প্রফেসর ছিলেন।
জুবাইদা গুলশান আরার বেশকিছু উপন্যাস ও ছোটগল্পের প্রসিদ্ধ লাভ করে। শিশুদের জন্য তিনি প্রচুর ছড়া কবিতা লিখেছেন। তার উপন্যাস ও ছোট গল্পের মধ্যে রয়েছে বসতি, আলোটুকুর হাতছানি, নদী তুই কোনঘাটে যাবি, মধ্যরাতের তারা, সাগর সেচার স্বাদ, তখনো ঘুম ভাঙেনি, ভোরের হিরন্ময়, আধারে নক্ষত্র জ্বলে, অগ্নিস্লান, কায়াহীন গারাগার, বাতাসে বারুদ রক্ত নিরুদ্ধ উল্লাস, হৃদয়ে বসতি, বিষাদ নগরে যাত্রা, দাওদানবের মালিকানা, প্রমিথিউসের আগুন, ঘৃণার জঠরে জন্ম, উষারাগ, অশ্রু নদীর ওপারে, কি লিখেছ তরবারি তুমি, পদ্মা আমার পদ্মা, হৃদয়ে নীল নাম, চৈতী তোমার ভালোবাসা, বিবর্ণ নগরী, মন্দাকিনী, উপন্যাস নদী, ভালোবাসার স্বভাব এমন, সোনালী রংয়ের নদী প্রভৃতি।

ছোটদের জন্য রচিত ছড়া কবিতা নিয়ে তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে মজার ছড়া, ছানাপোনাদের ছড়া, কলকাকলির গান, নিঝুম দ্বীপের গল্প কথা, ঘুম ভাঙ্গানো নদী, গল্প তবু গল্প নয়, রূপমের ছিরা খানা, তোমাদের জন্য গল্প, পরিচয় হোক বন্ধুর সাথে, শিশু তোর খেলার সাথী, ছোটদের নাটক মেলা প্রভৃতি।

তিনি বাংলাদেশ লেখিকা সংঘের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। জাতীয় মহিলা সংস্থা, এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলা একাডেমি, পেন বাংলাদেশ, ঢাকা লেডিস ক্লাব, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি প্রভৃতি সংস্থার সদস্য ছিলেন তিনি। সাহিত্য, সমাজ এবং নারী বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জড়িত থেকে তিনি নারীদের অগ্রগতি এবং নারী জগরণের পক্ষে কাজ করেছেন।

জুবাইদা গুলশান আরার মুজবা আমিন ও মেহতাব আমিন নামে দুই কন্যা রয়েছে। তার পিতার নাম মো : ইউনুস, মায়ের নাম আঞ্জুমান আরা। রোববার এশার নামজের পর জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তার দাফন করার কথা। তিনি ঢাকার সিদ্বেশ্বরীতে বসবাস করছিলেন।

Check Also

ঢাকা প্রসঙ্গে বদলাতে পারে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি

পাঁচ দশকের বিরতির পর গত মাসে বাংলাদেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রামে একটি পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজ ডক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।