ক্রাইমবার্তা রিপোট:কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের এক বছর পার হলেও ঘাতকরা এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। রবিবারও তনুর বাবাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তনুর মা মামলার তদন্ত কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, রবিবার দুপুরে একটি টিঅ্যান্ডটি নম্বর থেকে তনুর বাবাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। একটি সংস্থার নাম উল্লেখ করে তনুর বাবাকে বলা হয়েছে তিনি চাকরি করতে চান কিনা। চাকরি করতে চাইলে চুপ থাকতে বলা হয়েছে। মিডিয়ার সঙ্গে এত কথা বলার দরকার নাই বলে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন,‘আমরা মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে সিআইডি’র দ্বারে দ্বারে ঘুরে ক্লান্ত ও হতাশ হয়ে পড়েছি,জানি না বিচার পাব কিনা। সিআইডি কর্মকর্তারা শুধুই বলছেন, তনু হত্যাকাণ্ডে রহস্য উন্মোচন হবে এবং ঘাতকরা শাস্তি পাবে। এ পর্যন্ত বিচার পাবো এমন কোনও কার্যক্রম দেখিনি।’
তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং সিআইডি-কুমিল্লার সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, নভেম্বর,ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সেনাবাহিনীর মহড়া হয়। ওই সময় আমরা সন্দেহভাজনদের নিয়ে কাজ করতে পারিনি। ফেব্রুয়ারিতে কিছু কাজ করেছি। তনুর লাশের পাশে পড়ে থাকা সেন্ডেল,কলম, মোবাইল ফোন ও ব্যাগসহ কয়েকটি জিনিসের ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। রিপোর্ট পেলে আরও বেশি কাজ করা যাবে। আশা করছি দ্রুত একটা রেজাল্ট দিতে পারবো।
তনুর পরিবার জানায়,কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি জঙ্গল থেকে গত বছরের ২০ মার্চ রাতে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবি’র পর গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি-কুমিল্লা। ঘটনার পর পর ঘাতকদের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন মহলসহ দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠলেও ধীরে ধীরে সবই থেমে গেছে। তনুর লাশের দুই দফা ময়নাতদন্ত, মামলার তদন্তকারী সংস্থা ও কর্মকর্তা পরিবর্তন হলেও এ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি তনু হত্যা মামলা।
সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সদস্য বাকীন রাব্বী বলেন, তনুসহ অন্য হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ার কারণে মানুষ হতাশ। নারী নির্যাতন ও হত্যা বাড়ছে। আমরা দ্রুত তনু হত্যার বিচার চাই।