ক্রাইমবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক :যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক জেমস কোমি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ফোনে আড়ি পাতার জন্য পূর্বসূরি বারাক ওবামার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তার সত্যতা প্রমাণের মতো কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। সোমবার সিনেটের ইন্টেলিজেন্স কমিটির শুনানীতে সাক্ষ্য দিতে এসে তিনি এ কথা জানান।
গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ সম্পর্কে মার্কিন কংগ্রেসের ইনটেলিজেন্স কমিটির এই শুনানীতে কোমি ছাড়াও সাক্ষ্য দেন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান মাইকেল রজার্স।
জেমস কোমি একইসাথে প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে এটি নিশ্চিত করেন যে, গত মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ উঠেছে তার সংস্থা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে। তিনি আরো বলেন, মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের কোনও সহযোগী রাশিয়ার কোনও কর্মকর্তার সঙ্গে সহযোগিতা বা কোন ধরনের সহযোগিতার চেষ্টা করে থাকলে তাও খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাউন্টার ইনটেলিজেন্সের অংশ হিসাবে এই তদন্ত চলছে।
অপরদিকে অ্যাডমিরাল রজার্স স্পষ্ট করেই বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রভাবিত করার রাশিয়ার উদ্যোগ কেবল একটি দৃষ্টান্ত নয়। এখন তারা ইউরোপে একই ধরণের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে আমরা যেমনটা দেখেছি, যেটা ভুল তথ্য দিয়ে বা বানোয়াট খবর প্রকাশ করে করা হয়েছে সেই একই প্রয়াস আমরা ইউরোপেও দেখতে পাচ্ছি।”
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইনটেলিজেন্স কমিটির শুনানী চলার সময়েই এই টুইটার বার্তায় মন্তব্য করেন যে, সাক্ষ্য দানকারীরা বলেননি যে রুশ হ্যাকাররা ভোটের সংখ্যা পাল্টে দিয়েছিলো।
এদিকে ডেমোক্রেট দলের নেতা, নিউইয়র্কের সিনেটর চাক স্কামার প্রতিউত্তরে বলেন, “ট্রাম্পের প্রচারণা দলের সঙ্গে রুশ কর্মকর্তাদের সহযোগিতার সম্ভাব্যতার বিষয়টি গুরুতর, অত্যন্ত গুরুতর। তদন্ত অবশ্যই সর্বোতোভাবে সুষ্ঠু, স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ হতে হবে। আর তদন্তে যাই পাওয়া যাক না কেন এফবিআইকে অবশ্যই বাস্তব ঘটনা উদ্ঘাটনের সুযোগ দিতে হবে।”
এদিকে, নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগের রাত পর্যন্ত ওবামার নির্দেশে ট্রাম্প টাওয়ারের ফোনে আড়ি পাতা হয় বলে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ অভিযোগ তোলেন।
ওবামাকে ট্রাম্প একজন অসুস্থ ও খারাপ লোক হিসেবেও গালি দেন। তিনি এটাকে ‘ওয়াটারগেট’ কেলেঙ্কারির’ সঙ্গে তুলনা করেন। ১৯৭২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ডেমোক্রেট নির্বাচনী প্রচারণা দলের শিবিরে আড়ি পেতেছিলেন। এই ঘটনায় নিক্সনকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল।
ট্রাম্পের এই অভিযোগ ওঠার সাথে সাথেই ওবামার মুখপাত্র কেভিন লুইস জানিয়ে দিয়েছেন, এই অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। ওবামা বা হোয়াইট হাউসের কেনো কর্মকর্তাই কখনো ট্রাম্প টাওয়ারে নজরদারি করেননি।
গত শুক্রবার জার্মানির চ্যান্সেলর এঙ্গেলা ম্যারকেলের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনেও ট্রাম্প এই বিষয় উত্থাপন করে বলেন, আমাদের দুজনের অন্তত একটি বিষয়ে মিল আছে। তাহলো ওবামা আমাদের দুইজনের ফোনেই আড়ি পেতেছিলেন। ট্রাম্প অবশ্য কথাগুলো হেসেই বলেছিলেন।
তবে এফবিআই প্রধান কোমি বরেছেন, ওই অভিযোগের সত্যতা নিরূপনের মতো কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই।
তথ্য সূত্র: সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমস।