শ্রীলংকার বিপক্ষে এবার ওয়ানডে সিরিজটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য। কারণ এই প্রথমবারের মতো র্যাংকিংয়ের ছয়ে ওঠার হাতছানি বাংলাদেশের সামনে। তাই তিন ম্যাচের এই ওয়ানডে সিরিজটাকে বাংলাদেশ সিরিয়াস হিসেবেই নিয়েছে। শ্রীলংকার বিপক্ষে এবার সিরিজ জয়ের টার্গেট নিয়েই ওয়ানডে সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ। যদিও পরিসংখ্যানে শ্রীলংকা থেকে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ। কারণ শ্রীলংকার বিপক্ষে ৩৮ ম্যাচ খেলে মাত্র চারটিতে জিতেছে টাইগাররা। তবে পরিসংখ্যানে পিাছিয়ে থাকলেও বর্তমান পারফরমেন্সে এগিয়ে বাংলাদেশ। কারণ শ্রীলংকার বর্তমান দলটি নতুন দল। লংকান ক্রিকেটের পালাবদলে শক্তির দিক থেকে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ায় টাইগারদের ফেভারিট ভাবা হচ্ছে এই সিরিজে। তাই শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিততেই মাঠে নামেবে বাংলাদেশ। শ্রীলংকার বর্তমান দলটি নতুন হলেও বাংলাদেশ দল বেশ শক্তিশালী ও অভিজ্ঞ। মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক, রিয়াদের সঙ্গে মুস্তাফিজ, তাসকিন, শুভাশিষ মিলে দারুণ ভারসাম্য এখন টাইগার দলটি। সেই সাথে শততম টেস্ট জয়ের পর পাল্টে গেছে টাইগারদের মাসসিক অবস্থা। পুরো দল এখন উৎফুল্ল। শততম টেস্টে জয়ের পর একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে মাত্র দুই রানে হারলেও দলের সবাই রান পেয়েছে। ফলে সবকিছু মিলিয়ে ওয়ানডে সিরিজের আগে দারুণ আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দল। টেস্ট সিরিজ ড্র করে কলম্বো থেকে ডাম্বুলা পৌঁছে প্রথম দিন কোন অনুশীলন করেনি বাংলাদেশ দল। তবে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করার আগে গতকাল অনুশীলণ করেছে মাশরাফিরা। সেই সাথে ওয়ানডে ম্যাচের ভেন্যু ডাম্বুলার সাথেও নিজেদের মানিয়ে নেয়ার চেস্টা করছে টাইগাররা। এর আগে ডাম্বুলাতে তিনটি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যার সবক’টি ২০১০ সালের এশিয়া কাপে। এই ভেন্যুতে সাকিব, তামিম, মাশরাফি, মুশফিক ও রিয়াদের খেলার অভিজ্ঞতা আছে। তাই ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে একদিনের অনুশীলনে ক্রিকেটারদের খুব বেশি সমস্যা হওয়ার কথা নয় বাংলাদেশের। ডাম্বুলার উইকেটে প্রচুর রান করার সুযোগ আছে। কারণ এখানে অনেক রান উঠে। তাই উইকেটের ওপর নির্ভর করে দল নির্বাচন করতে হবে টাইগারদের। কিন্তু একাদশ সাজাতেই কিছুটা সমস্যায় পড়তে হবে টিম ম্যানেজম্যান্টকে। কারণ প্রথম ১৬ সদস্যের দলের সাথে যোগ হয়েছে মেহেদি হাসান মিরাজ। তাই ১৭ জন থেকে নির্বাচন করতে হবে একাদশ। অভিজ্ঞতা আর কম্বিনেশনের কারণে হয়তো মুশফিককে কিপিং করতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে সোহানকে বসে থাকতে হবে। মিরাজ-মোসাদ্দেক দুজনকে একসঙ্গে সুযোগ দিতে গেলে মাহমুদউল্লাহকে বসে থাকতে হতে পারে।
এই সিরিজটি আরো একটি কারণে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য। এই সিরিজ জিতে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের উপরে উঠার হাতছানি বাংলাদেশের সামনে। কারণ শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের ওপর বাংলাদেশের র্যাংকিং নির্ভর করছে। এই সিরিজ দিয়েই ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পথটা সহজ হয়ে যেতে পারে মাশরাফিদের। তবে আবার এর উল্টোটাও হতে পারে। যদি সিরিজ জিতে শ্রীলংকা। কারণ শ্রীলংকা ৯৮ পয়েন্ট নিয়ে বর্তমানে আছে র্যাংকিংয়ের ষষ্ঠ স্থানে। আর ৯১ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান সাত নম্বরে। সিরিজের ফলাফলে বদলে যেতে পারে র্যাংকিংয়ের চিত্রও। তাই কঠিন সমীকরণ সামনে নিয়েই লঙ্কানদের বিপক্ষে মাঠে নামবে মাশরাফিরা। ৩০ সেপ্টেম্বর আইসিসির প্রকাশ করা র্যাংকিংয়ে ইংল্যান্ডের সঙ্গে শীর্ষে থাকা সাত দল সরাসরি জায়গা কর নেবে ২০১৯ বিশ্বকাপের মূল পর্বে। তবে বর্তমানে বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানেই আছে। এই সিরিজে শ্রীলংকাকে ৩-০ ব্যবধানে হারাতে পারলে বাংলাদেশের হবে ৯৬ পয়েন্ট। সেক্ষেতে বাংলাদেশ উঠে যাবে ছয় নম্বরে। আর শ্রীলংকা নেমে যাবে সাতে। তবে শ্রীলংকা ২-১ ব্যবধানে জিতলেও বাংলাদেশের পয়েন্টে কোনও নড়চড় হবে না। এখনকার মতো ৯১ পয়েন্ট নিয়ে থাকবে সাত নম্বরেই। তাই শ্রীলংকার বিপক্ষে অন্তত একটা ম্যাচ জেতা বাংলাদেশের বিশ্বকাপ যাত্রার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলে বাংলাদেশ আট নম্বরে নেমে যাবে। কারণ তখন বাংরাদেশের পয়েন্ট গিয়ে দাঁড়াবে ৮৮। ফলে ৮৯ পয়েন্ট নিয়ে আট থেকে সাতে উঠে আসবে পাকিস্তান।