ক্রাইমবার্তা রিপোট:সিলেট মহানগরীর দক্ষিণ সুরমা উপজেলার শিববাড়ির জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহলে’ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।সোমবার ভোর থেকে চতুর্থ দিনের মতো অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো বাহিনী।
সোমবার ভোর থেকে চতুর্থ দিনের মতো অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো বাহিনী।
অভিযান শুরুর পর ভোর সাড়ে ৬টা থেকে ভারী গুলিবর্ষণ ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এটি চলে একটানা ৭টা পর্যন্ত।
এরপর সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যায়। মাঝে কিছুটা সময় কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি। তবে সকাল সোয়া ৯টার পর থেকে আবারও থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
এর আগে রোববার গভীররাতে তিন দফা গোলাগুলি হয় বলে অভিযান সূত্রে জানা গেছে।
কড়া নিরাপত্তার অংশ হিসেবে আতিয়া মহলের চতুর্দিকে দুই বর্গকিলোমিটার এলাকায় সাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। কাউকে সেখানে ভিড়তে দেয়া হচ্ছে না।
তৃতীয় দিনের অভিযান শেষে গতকাল রোববার বিকালে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করা হয়। এ সময় সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান বলেন, অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। ভেতরে এক বা একাধিক জঙ্গি থাকতে পারে। কবে নাগাদ অভিযান শেষ হবে তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, জঙ্গিরা ভবনের নিচের ফ্লোরে আইডি লাগিয়ে রেখেছে। ভবনের ভেতরে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ছড়ানো রয়েছে।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, নব্য জেএমবির সদস্যরা আতিয়ার ভবনকে অস্ত্র ও বিস্ফোরকের মজুদখানা হিসেবে ব্যবহার করেছে। ঢাকা, ঢাকার আশপাশে এবং উত্তরাঞ্চলে পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানের কারণে তারা সিলেট অঞ্চলকে নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নেয়।
গত বছরের অক্টোবরে গাজীপুরের পাতারটেকে অভিযানের পর থেকেই নব্য জেএমবির শীর্ষ জঙ্গিরা এ অঞ্চলকে টার্গেট করে আস্তানা তৈরি করে।
ওই আস্তানায় তৈরি হওয়া গ্রেনেড ও বিস্ফোরক দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মঘাতী জঙ্গিদের পৌঁছে দেয়া হতো বলে জানিয়েছেন একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। এই আস্তানায় সুইসাইড ভেস্টও তৈরি করা হতো বলে জানিয়েছেন একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার এই বাড়িটি গত বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে ঘিরে রাখা হয়েছে। শুক্রবার ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াত সিলেটে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ঘটনাস্থল ঘেরাও করে।
এরপর শনিবার সকাল থেকে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দল ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের মধ্যেই শনিবার সন্ধ্যায় দুই দফা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬ জন নিহত এবং আরও ৪৪ জন আহত হন।