ক্রাইমবার্তা রিপোট: সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সমস্যাকে জাতীয়ভাবে মোকাবিলার জন্য ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রতি আবারো আহবান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, এই সমস্যা বিশেষ কোনো সরকার বা দলের নয়, এটি একটি জাতীয় সমস্যা। এ সংকট মোকাবিলায় আমাদেরকে প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে অগ্রসর হতে হবে। সেই আহ্বান আমি বরাবর জানিয়ে আসছি। দুঃখের বিষয় আমাদের আহ্বান এখন পর্যন্ত চরমভাবে উপেক্ষিত হয়ে আসছে।মঙ্গলবার রাতে পাঠানো এক বিবৃতিতে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, দোষারোপের রাজনীতি না করে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের সমস্যাকে জাতীয়ভাবে মোকাবিলার জন্য আমি ক্ষমতাসীনদের প্রতি আবারো আহ্বান জানাচ্ছি। দেশের সকলকে আমি এ সমস্যা নিরসনে ঐক্যবদ্ধ হবার অনুরোধ করছি।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই কেন জঙ্গিবাদ এভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও আমরা এ প্রশ্ন কখনো তুলিনি এবং এ নিয়ে দোষারোপের রাজনীতিতেও লিপ্ত হইনি এ মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সংকটে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশও এ থেকে বিচ্ছিন্ন নয়।
বিএনপি প্রধান বলেন, সিলেট, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি ধর্মীয় জঙ্গীবাদের নামে পরিচালিত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিস্তারে দেশবাসীর মতো আমিও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত। সিলেটে একটি আবাসিক ভবনে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ গোপনে অবস্থানকৃত সন্ত্রাসীদের দমনের লক্ষ্যে সফল অভিযান পরিচালনার জন্য আমি আমাদের সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোবৃন্দসহ দেশরক্ষা বাহিনীর প্রতি অভিনন্দন জানাচ্ছি। অভিযানে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য এবং যে-সব সাধারণ মানুষ হতাহত হয়েছেন, তাদের প্রতি জ্ঞাপন করছি শোক ও সহানুভূতি।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদেরকে মনে রাখতে হবে কেবলমাত্র দমন অভিযান চালিয়ে সমাজ থেকে জঙ্গিবাদের শেকড় পুরোপুরি উচ্ছেদ করা সম্ভব নয়। দু’-একটি দমন অভিযানের সাফল্যে আত্মপ্রসাদ লাভ করারও কোনো সুযোগ নেই। মুসলিমপ্রধান এই দেশটিতে গণতন্ত্রহীনতা, জবাবদিহিতাহীন শাসন, দুর্নীতি, সুবিচারের অভাব এবং যুব সমাজের বেকারত্বই জঙ্গিবাদ বিস্তারের প্রধান কারণ। এ কারণগুলো দূর করতে হবে। জনগণকে আস্থায় নিয়ে তাদের কাছ থেকে সক্রিয় সহযোগিতা নিতে হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমানে স্পর্শকাতর একটি সময়ে জঙ্গিবাদের আকষ্মিক বিস্তার এবং দমন অভিযানে স্বচ্ছতার অভাবে জনমনে নানা প্রশ্ন ও সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এই সব সন্দেহ দূর করতে হবে। আমি এই বিষয়গুলো অবিলম্বে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের আহ্বান জানাচ্ছি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর ও খুবই স্পষ্ট। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হবার পর দেশব্যাপী এই সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিস্তার ঘটে। ২০০১ সালে নির্বাচিত হয়ে আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর আমাদের সরকারও জঙ্গিবাদের এই সংকটের মুখোমুখি হয়। আমরা কঠোর হাতে তা দমন করি। জঙ্গি সংগঠনগুলোর নেটওয়ার্ক পুরোপুরি ভেঙে দেয়া হয় এবং শীর্ষ জঙ্গি নেতাদের জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার করে তাদের বিচার সম্পন্ন করা হয়। পরে তাদের শাস্তি কার্যকর হয়।
Check Also
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করেননি সমাজী
জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক …