ক্রাইমবার্তা রিপোট:রাজধানীর এফডিসিতে এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে আজ শনিবার বক্তব্য দেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এ টি এম শামসুল হুদা।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার বাস্তবসম্মত হবে না বলে জানিয়েছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ড. এ টি এম শামসুল হুদা। তবে ইউনিয়ন বা উপজেলা পর্যায়ে ইভিএম যন্ত্র পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর এফডিসি মিলনায়তনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি (ডিএফডি) আয়োজিত এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে শামছুল হুদা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে এ টি এম শামছুল হুদা বলেন, ‘ইভিএম মেশিন পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হোক। উপজেলা ইলেকশনে, ইউনিয়ন পরিষদ ইলেকশনে, সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে চলুক, চলতে থাকুক। দেখুক লোকে, করতে করতে একটা কালচারের সৃষ্টি হোক। এটা পাঁচ-সাত বছর ধরে যদি চলে তারপর জনগণ এই পদ্ধতির বিষয়ে আস্থাশীল হবে। তারপরে এটা হলে রাজনৈতিক দলের লোকজনও আপত্তি করবে না।’
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির অভাব রয়েছে। তাই রাজনৈতিক দলসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবার এ বিষয়ে পর্যাপ্ত ধারণা প্রয়োজন। এসব বিবেচনায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ বাস্তবসম্মত হবে না।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোয় পর্যায়ক্রমে ইভিএম ব্যবহার করা হলে জনগণের কাছে এতদিনে গ্রহণযোগ্যতা পেত বলেও মনে করেন শামছুল হুদা।
ইভিএমের ব্যবহার নির্বাচনে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে কি না-এ বিষয়ে ছায়া সংসদ বিতর্কে সভাপতিত্ব করেন ডিএফডির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতায় সরকারি দল হিসেবে অংশ নেয় বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি এবং বিরোধী দলে ছিল ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, গণতন্ত্র ও সুশাসন ছাড়া উন্নয়ন টেকসই করা যায় না। আর গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। ইভিএমের ব্যবহার সেই সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারে কি না সেটিই এখন দেখার বিষয়। তবে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পারস্পরিক অবিশ্বাস রয়েছে। তাই ইভিএমের ব্যবহার বিষয়ে যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং জনসচেতনতা তৈরি করা দরকার। তবে নির্ভয়ে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে নাগরিকদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন সরকার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন কিরণ।
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ জানান, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ থাকলেও এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের আন্তরিক ভূমিকার কারণে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছে। ভবিষ্যতে যে কোনো নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনকে আরো বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
ছায়া সংসদে সরকারি দল বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি বিরোধী দল ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে। অনুষ্ঠান শেষে বিতার্কিকদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। বিতর্ক অনুষ্ঠানে বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু রইস, ড. এস এম মোর্শেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান খান।