ক্রাইমবার্তা রিপোট:প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের মধ্যে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তাকে দোহাই দিয়ে আপনারা বারবার শৃঙ্খলা বিধিমালার গেজেট জারি করার জন্য সময় নিচ্ছেন। কালক্ষেপণ করছেন। এতে আমাদের কষ্ট লাগে।’
আজ মঙ্গলবার নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরীর শৃঙ্খলা বিধিমালার গেজেট জারি করতে রাষ্ট্রপক্ষে আবারো সময় চাওয়া হলে প্রধান বিচারপতি এ মন্তব্য করেন।
আজ গেজেট জারি করে তা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু গেজেট জারি না করে আবারো দুই সপ্তাহ সময় প্রার্থনা করে সরকার। সরকারের এই সময় আবেদন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তখন প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, ‘আমরা সব সময় আপনার মুখে হাসি দেখতে পাই। কিন্তু এই মামলাটি শুনানির জন্য আসলে আপনি আদালতে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন।’
এ পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘বারবার সময় আবেদন দেওয়াতে আমার মধ্যেও অপরাধবোধ কাজ করে। তিনি বলেন, বিধিমালার গেজেট জারির বিষয়ে রাষ্ট্রপতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। আইন মন্ত্রণালয় আশা করছে এর জন্য দুই সপ্তাহের সময় প্রয়োজন।’
এরপর প্রধান বিচারপতি আগামী ৮ মের মধ্যে শৃঙ্খলা বিধিমালার গেজেট জারি করে আদালতে দাখিলের জন্য দিন ধার্য করে দেন। তখন আপিল জ্যৈষ্ঠ বিচারক বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাব মিয়া বলেন, ‘আপনারা দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু সামনে অবকাশ থাকায় ৮ মে পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। এবার অনেক সময় পেয়েছেন। গেজেট জারি করে আদালতে দাখিল করুন। আর কোন অজুহাত দেখাবেন না।’
প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, ‘আমরা আপনার হাসি মুখ দেখতে চাই। এই হাসিটা যেন মিলিয়ে না যায়।’
এর আগে গত ২৮ মার্চ শৃঙ্খলা বিধিমালা গেজেট জারি করে আপিল বিভাগে দাখিল করার জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু সরকার ঐদিনও গেজেট জারি করে আদালতে দাখিল করতে পারেনি। তখন সরকারের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছিল আদালত। কিন্তু ঐ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও আজও গেজেট দাখিল করতে পারেনি সরকার। আজ পুনরায় সময় চেয়ে আবেদন দাখিল করে সরকার। এ নিয়ে ১৫ বার সময় চাইল সরকার।
সর্বশেষ গত বছরের ৮ ডিসেম্বর এক আদেশে দুই সচিবকে তলব করে আপিল বিভাগ। ওই তলব আদেশে গত ১২ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হন আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব। তারা রাষ্ট্রপতির একটি প্রজ্ঞাপন আদালতে দাখিল করে বলেন, রাষ্ট্রপতি বলেছেন গেজেট জারির প্রয়োজন নেই।