ক্রাইমবার্তা রিপোট:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ পরিষ্কারভাবেই বলেছেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে কোনো চুক্তি হলে তা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেই হবে, দেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কিছুই করা হবে না। তিরি বলেন, ‘একটি স্বার্থান্বেষী মহল ১৯৭৪ সালে ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ২৫ বছরের সমঝোতা চুক্তিকে গোলামীর চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। কিন্তু এই চুক্তি থেকে সীমান্ত সমস্যা সমাধানসহ বাংলাদেশেরই অর্জন বেশি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির উদ্যোগে বাস্তবায়নাধীন পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটির প্লটের বরাদ্দপত্র পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন পদমর্যাদার ২৫ জন পুলিশ সদস্যের মধ্যে বিতরণকালে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতির জন্য শেখ হাসিনা দেশের পঁচাত্তরপরবর্তী সরকারগুলোকেই দায়ী করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া কখনও ভারতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেন নাই। উপরন্তুু তারা সীমান্তে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ে উদাসীন ছিলেন। বিএনপি-জামায়াত তাদের শাসনামলে দেশের ভেতরের সকল সন্ত্রাসি কর্মকান্ড পরিচালনা এবং বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র পাচারের মূল হোতা ছিল। ওই অস্ত্র বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে চোরাচালান হয়ে ভারতে যাচ্ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব অটুট রেখেই সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পেরেছে। একইসঙ্গে একইভাবে ভারত এবং মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা সমস্যারও সমাধান করেছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুলিশ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও অনেকেই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে গৃহীত আমাদের অ্যাকশনপ্লান নিয়ে সমালোচনা করেছে।
কিন্তু বাংলাদেশই পৃথিবীতে একমাত্র দেশ যারা জঙ্গিদের অ্যাকশনের পূর্বেই বহু জঙ্গি আস্তানা গুড়িয়ে দিতে সমর্থ হয়েছে।
পুলিশদের কর্তব্য পালনের কোনো নির্দিষ্ট ডিউটি আওয়ার না থকায় তাদের দায়িত্ব পালনকে অত্যন্ত কঠিন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো সময় ডাক পড়লেই তাদের যেতে হয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার দেশের জনসংখ্যার সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে পুলিশ বাহিসীর সদস্য সংখ্যা আরো বাড়ানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যেই ৪১ হাজার পুলিশ সদস্যকে বাহিনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং শীঘ্রই আরো ১০ হাজারকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
পুলিশ বাহিনীর সদস্য এবং তাদের পরিবার-পরিজনদের কল্যাণে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারই প্রথম ২০০০ সালে পুলিশ স্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করে। তার সরকার অন্যান্য সরকারি চাকরিজীবীদের সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদেরও আবাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হতে ১৭ বছর লেগে গেছে বলে আক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ সদস্যদের জন্য এ ধরনের আবাসন সুবিধা জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়েও সম্প্রসারণ করা হবে।
এর আগে পুলিশের আইজিপি মো. শহীদুল হক শত প্রতিকুলতা সত্ত্বেও পুলিশ হাউজিং সোসাইটিকে বাস্তব রূপ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।