ক্রাইমবার্তা স্পোর্টস ডেস্ক:ক্যাপ্টেন আর লিডার তো এক নয়। মাশরাফি দুটোই। সেখানে তার আচমকা এমন আবসরের পেছনে ভিন্ন কোনো কারণ থাকতে পারে বলে মনে করেন জাতীয় দলে সাবে ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলট।
মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টুয়েন্টি খেলতে নামার আগেই কলম্বো থেকে উড়ে এলো আচমকা মাশরাফির টি-টুয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা। এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে পাইলট মনে করেন, দলের নেতা হিসেবে আরো অনেক দিন দরকার ছিল নড়াইল এক্সপ্রেসকে। এসব ভেবেচিন্তে মাশরাফির অবসরের পেছনে ম্যানেজমেন্টের কোন বিষয় থাকতে পারে বলেও আমি মনে করি।
তিনি বলেন, আমার মতে হয়তো বা মাশরাফির সাথে ম্যানেজমেন্টের মতের অমিল কিংবা অধিনায়ক ও খেলোয়াড় হিসেবে শীর্ষ যাদের সাথে কাজ করতে হয় তাদের কাছ থেকে প্রাপ্য মানসিক সমর্থনটা পাচ্ছিলেন না হয়তো বা। তাছাড়া মাশরাফি বিন মুর্তজা একজন ‘লিডার’। সেখানে মাশরাফির এই হঠাৎ অবসরে বাংলাদেশের টি-টুয়েন্টি দল পড়ে যাবে নেতার সঙ্কটে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি মাশরাফিকে আরো কয়েক বছর বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে দরকার ছিল।’ সাফ কথা একসময় তার নেতৃত্বে খেলা ও বেড়ে ওঠা মাশরাফিকে নিয়ে বললেন পাইলট। সাবেক উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান এর সাথে সংশয়ও প্রকাশ করলেন। সংশয়টা মঞ্চের পেছনে আর কিছু আছে কি না তা নিয়ে। পাইলটের ভাষায়, ও হয়তো ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে কোনো ইশারা পেয়েছিল। মনে আছে নিশ্চয়ই নিউজিল্যান্ড সফরেও কিন্তু এমন অবসরের কথা নিয়ে নানা কিছু ঘটেছিল। ওর সাথে কেমন যেন বনিবনা হচ্ছিল না। এমন হতে পারে যে ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সমর্থনটা পাচ্ছিল না মাশরাফি।’
তিনি বলেন, ২৬ টি-টুয়েন্টির ৯টিতে মাশরাফির বাংলাদেশ জিতেছে। যে খেলায় একেবারে দুর্বল দল বাংলাদেশ। সেখানেও এতো সাফল্য। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি। ওয়ানডের নেতা থাকছেন। কিন্তু এভাবে যে অবসরের ঘোষণা আসবে সেটা পাইলট সাবেক সতীর্থের ব্যাপারে নিজেও ভাবতে পারেননি। গত ৬/৭ মাস ধরে মাশরাফির এই ফরম্যাটের ক্রিকেটে পারফরম্যান্স নিয়ে কথা হচ্ছিল। এটা মানতে হবে যে তার বোলিং পারফরম্যান্সে কিছু ঘাঁটতি দেখা গেছে। কিন্তু মাশরাফি এমন একজন লিডার যাকে এরপরও দরকার।
পাইলট বলে চলেন, কিন্তু মাশরাফি তো নিজের ব্যাপারটা খুব ভালো ভাবে বোঝে। পারফর্মার হিসেবে খুব ভালো কিছু দিতে পারছিল না বলে হয়তো কষ্ট পাচ্ছিল। নেতিবাচক কিছুর মুখোমুখিও হয়তো হয়েছে। তাছাড়া ওর শরীরের ব্যাপারটাও আছে। এতো ইনজুরির পরও এভাবে খেলে যাওয়া দেশকে দিয়ে যাওয়া তা কেবল ও মাশরাফি বলেই সম্ভব হয়েছে।
তারপরও কথা থেকে যায়। এই যেমন মাহমুদউল্লাহকে শ্রীলঙ্কায় দ্বিতীয় টেস্টের দল থেকে বাদ দেওয়া। আবার মেহেদী হাসান মিরাজকে ওয়ানডে দলে নিয়ে নেওয়া দেশ পাঠিয়ে দেওয়ার পরও। বোর্ড প্রেসিডেন্ট তো দুটোই তার সিদ্ধান্ত বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর হঠাৎ করে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে প্রথম টি-টুয়েন্টিতে অভিষেক করিয়ে দেওয়া। এসব কি কিছুর ইঙ্গিত বহন করে? প্রশ্ন আছে পাইলটের মনেও। সবাই হাথরুরুর কথা বলে। যে দলটা ও করেছে। ওর দোষ দেয়। কিন্তু আমার পর্যবেক্ষণে এর পেছনে আর কিছু আছে। কেউ না কেউ ভুল তথ্য দিচ্ছে উচ্চপদস্থদের। সিদ্ধান্তগুলো অন্য কোথাও থেকে আসলেও আসতে পারে। এসব ব্যাপার মাশরাফির মতো ব্যক্তিত্ববান অধিনায়কের পছন্দ হবে কেন? তাই সরে যাওয়া হয়তো। কিন্তু পাইলট যে পুরো ব্যাপারটাকে খুব স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন তা যে নয় সেটা পুরো স্পষ্ট তার কথায়।
তাহলে কি কোনো চাপের মুখেই সরে গেলেন দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় অধিনায়ক? ব্যাপারটা সত্যি তেমন কিছু হলে তা দেশের ক্রিকেটের জন্যও লজ্জার বলেও তিনি জানান।
Check Also
আশাশুনিতে ছাত্র শিবিরের আন্তঃ ইউনিয়ন ফুটবল টুর্ণামেন্ট
আশাশুনি প্রতিনিধি।। আশাশুনিতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির আশাশুনি উপজেলা শাখার আয়োজনে আন্তঃ ইউনিয়ন ফুটবল টুর্নামেন্ট …