ক্রাইমবার্তা রিপোট:মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় রিভিউ (পুনরায় বিবেচনা ) আবেদন শুনানি আগামী রোববার আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে। কার্যতালিকার ১৩৯ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে এ মামলাটি। রিভিউ শুনানির জন্য বেঞ্চ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
এর আগে গত ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ মামলার রিভিউ শুনানির জন্য আগামী ১৪ মে তারিখ নির্ধারণ করেন।
বেঞ্চের অপর তিন সদস্য ছিলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
তবে রোববারের কার্যতালিকায় এ মামলার রিভিউ শুনানির জন্য বেঞ্চ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
পুনর্গঠিত বেঞ্চে পূর্বের চার বিচারপতির সাথে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞাকে যুক্ত করা হয়েছে।
মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মামলার আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হয় সাবেক প্রধান বিচারপতি মো: মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চে। বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা সেই বেঞ্চের সদস্য ছিলেন। অপর যারা সদস্য ছিলেন তারা হলেন- বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ ও সিদ্দিকী ও বর্তমানে অবসরে যাওয়া বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী।
গতকাল বৃহস্পতিবার মাওলানা সাঈদীর রিভিউ শুনানির তারিখ নির্ধারণী বেঞ্চে আপিল মামলার শুনানিতে অংশ নেয়া বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা ছিলেন না।
মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন নয়া দিগন্তকে জানান, বেঞ্চ পুনর্গঠিত হওয়ার কারণে মামলাটি কার্যতালিকায় এসেছে বলে তিনি মনে করেন।
গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় প্রথমবারের মত মাওলানা সাঈদীর রিভিউ শুনানির জন্য রাখা হয়। পরে ৬ এপ্রিল ১৪ মে শুনানির তারিখ ধার্য করেন আদালত।
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে আমৃত্যৃ কারাদণ্ড দেন মাওলানা সাঈদীকে।
এর আগে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেন ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে গটিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
ট্রাইব্যুনালের রায়ে মাওলানা সাঈদীকে মোট আটটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এর মধ্যে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। অপর ছয়টি অভিযোগে কোনো সাজা উল্লেখ করেননি ট্রাইব্যুনাল। ১৯৭১ সালে ইব্রাহীম কুট্টি এবং বিশাবালীকে হত্যার অভিযোগে মুত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।
আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে বিশাবালী হত্যার অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ইব্রাহিম কুট্টি হত্যার অভিযোগে ১২ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। আপিল বিভাগের রায়ে বিশাবালী হত্যাকাণ্ডসহ মোট তিনটি পৃথক অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয় মাওলানা সাঈদীকে।
আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে উভয় পক্ষ রিভিউ আবেদন করে। রাষ্ট্রপক্ষ আমৃত্যুর পরিবর্তে ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায় মৃত্যুদণ্ড বহাল চেয়ে এবং মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সব অভিযোগ থেকে খালাস চেয়ে পূনরায় আবেদন করা হয়।
২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের রায়ের লিখিত কপি প্রকাশের পর ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে রিভিউ আবেদন দায়ের করে উভয় পক্ষ।